লেসন-১: নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির আবেদন ফরমসমূহের প্রযোজ্যতা
তালিকাভুক্তির
আবেদন মূসক-২.১ ফরমে
করতে হয়। নিবন্ধনের আবেদন কেন্দ্রীয় নিবন্ধনের জন্য মূসক-২.১ এ
এবং শাখা ইউনিটের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে প্রথমে কেন্দ্রীয় নিবন্ধনের জন্য মূসক-২.১ এবং
পরবর্তীতে প্রতিটি শাখা ইউনিটের জন্য মূসক-২.২ ফরমে
আবেদন করতে হয়। মূসক-২.২ শুধু
কোনো কোম্পানির শাখাগুলো স্বতন্ত্র হিসাবরক্ষণ করলে তার জন্য প্রযোজ্য। এটি হিসাবরক্ষণের স্বাভাবিক পদ্ধতিতে প্রযোজ্য নয়। বিশেষ ক্ষেত্রে মূসক-২.২ প্রযোজ্য।
লেসন-২: নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির আবেদন ফরম মূসক-২.১ পূরণ
মূসক-২.১ পূরণের পদ্ধতি নিম্নরূপ:
ক্রমিক
|
বিষয়
|
পূরণের পদ্ধতি
|
১
|
করদাতা সনাক্তকরন সংখ্যা (ই টিআইএন)
|
করদাতার ই-টিআইএন লিখতে হবে।
বিশেষ ক্ষেত্রসমূহ:
|
২
|
নিবন্ধন
বা তালিকাভুক্তি যোগ্য ব্যক্তির নাম
|
এ ঘরে
নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তিযোগ্য ব্যক্তির নাম লিখতে হবে। ব্যক্তি বলতে বোঝায়:
|
৩
|
নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির ঠিকানা
|
যে ঠিকানায় করদাতা নিবন্ধিত হতে চান এখানে সে ঠিকানা
লিখতে হবে। যেসকল প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায় কার্যক্রম একাধিকস্থান হতে পরিচালিত হয়
তাদের ক্ষেত্রে এ ঠিকানা সদর দপ্তর হলেই ভালো হয়। তবে তা কী হবে তা করদাতার ওপর
নির্ভর করে।
এই ঘরে বর্ণিত পোস্টাল কোড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে প্রদত্ত পোস্টাল কোডের ওপর নির্ভর করে নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তির কমিশনারেট নির্ধারণ করা হবে। এখানে প্রদত্ত কোড যে কমিশনারেটের অধীক্ষেত্রের আওতায় থাকবে সেই কমিশনারেটের অধিন নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত হবে। তাকে সকল কাজ উক্ত কমিশনারেটের সাথেই করতে হবে। কাজেই এই ঘরে প্রদত্ব ঠিকানার সঠিক পোস্টাল কোড জেনে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির আবেদন করা প্রয়োজন হবে। কারণ নিবন্ধনের অন্য সকল তথ্য পরিবর্তন সহজ হলেও এই ঠিকানা পরিবর্তন করতে হলে কমিশনারের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করতে হবে। |
৪
|
শাখা
ইউনিটের ঠিকানা
|
কোনো
ব্যক্তির করযোগ্য কার্যক্রম যদি একাধিক স্থান হতে সম্পন্ন হয় এবং ব্যবসায়িক
হিসাব কেন্দ্রীয়ভাবে রাখা হয় তাহলে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির ঠিকানা ব্যতীত অন্য
সকল স্থান এক একটি শাখা হিসেবে বিবেচিত হবে এবং প্রতিটি শাখার নাম ও ঠিকানা এখানে
লিখতে হবে।
|
৫
|
ব্যাংক হিসাবের তথ্য
|
করদাতার ব্যবসায়িক লেন-দেন সম্পন্ন হয় এমন এক বা
একাধিক ব্যাংক একাউন্ট সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করতে হবে। এটি বাধ্যতামূলক তথ্য।
ব্যাংক একাউন্টের তথ্য ব্যতীত বিআইএন তৈরি হবে না। এক লক্ষ টাকার বেশি মূল্যের
ক্রয়ের ক্ষেত্রে এখানে প্রদত্ত একাউন্টের মাধ্যমে আংশিক বা পূর্ণ মূল্য পরিশোধ
না করলে রেয়াত বাতিল হয়ে যাবে। আবার কমিশনার ফেরতযোগ্য অর্থ এখানে প্রদত্ত
একাউন্টে ফেরত প্রদান করবেন। ফলে ব্যাংক একাউন্টের তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
|
৬
|
বার্ষিক
টার্নওভারের পরিমান
|
বার্ষিক
টার্নওভারের ওপর ভিত্তি করে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি নির্ধারিত হবে। পূর্বে
বর্ণিত পদ্ধতিতে টার্নওভার নির্ধারণ করে তা এখানে উল্লেখ করতে হবে।
|
৭
|
নিবন্ধনের প্রকৃতি
|
ক্রমিক ৬ এ বর্ণিত টার্নওভার নিবন্ধনসীমার নিচে হলে
টার্নওভার তালিকাভুক্তি আর নিবন্ধনসীমার ওপরে হলে মূসক নিবন্ধন নির্বাচন করতে
হবে। তবে স্বেচ্ছা নিবন্ধন এবং সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য সরবরাহ প্রদানের
ক্ষেত্রে মূসক নিবন্ধন নির্বাচন করতে হবে।
|
৮
|
আপনি
কি উৎসে মূসক কর্তনকারী?
|
উৎসে কর্তন
বাংলাদেশ মূসকের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট। উৎসে কর্তনকারীকে উৎসে কর্তনের জন্য বিশেষ
কিছু কাজ করতে হয়। কর পরিশোধ এবং হিসাবরক্ষণে ক্ষেত্রেও কিছু কাজ আছে যা মূসকের
স্বাভাবিক কাজের অতিরিক্ত। আপনার ক্ষেত্রে উৎসে কর্তন প্রযোজ্য হবে কিনা তা
জানার উপায় হলো উৎসে কর্তনকারী সত্তার তালিকা জানা, যথা:
|
৯
|
নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি যোগ্য ব্যক্তির
প্রকৃতি
|
এখানে নিবন্ধন বা তালিকাযোগ্য "ব্যক্তি"র
আইনানুগ প্রকৃতি নির্বাচন করতে হবে।
|
১০
|
মূসক
বা টার্ন ওভার ব্যতীত অনান্য কর পরিশোধের দায়বদ্ধতা আছে কিনা
|
কোনো
ব্যক্তি যদি সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য সরবরাহের ব্যবসায় করেন বা সম্পূরক শুল্ক
আরোপযোগ্য কোনো পণ্য আমদানি করেন তাহলে তাকে বাধ্যতামূলকভাবে মূসক নিবন্ধন গ্রহণ
করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বার্ষিক নিবন্ধন বা তাকিাভুক্তিসীমা প্রযোজ্য হবে না।
আইনের দ্বিতীয় তফসিলভুক্ত আমদানি বা সরবরাহ সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য।
অপর দিকে আবগারি আইনের আওতায় আবগারি শুল্ক প্রযোজ্য হয়। উক্ত আইনে দাখিলপত্র দেওয়ার বিধান থাকলেও এর পরিধি অত্যন্ত ছোট বিধায় তা বাস্তবায়ন করা যায় না। এ প্রেক্ষিতে মূসক দাখিলপত্রের সাথেই আবগারি শুল্ক আদায়ের লক্ষে এখানে আবগারি শুল্ক আনা হয়েছে যাতে দাখিলপত্রের সময় তা তত্ত্বাবধান করা যায়। |
১১
|
নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি কার্যকারিতার
তারিখ
|
কোন তারিখ হতে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি প্রযোজ্য হবে
তা এখানে উল্লেখ করতে হবে। পুনঃনিবন্ধনের ক্ষেত্রে প্রথম নিবন্ধনের তারিখ উল্লেখ
করতে হবে।
|
১২
|
আবেদনের
প্রকৃতি
|
আবেদনের
তিনটি প্রকৃতি রয়েছে।
বাধ্যতামূলক: করযোগ্য ব্যক্তির করযোগ্য অর্থনৈতিক কার্যক্রমের বার্ষিক টার্নওভার তালিকাভুক্তিসীমা অতিক্রম করলে কিন্তু নিবন্ধনসীমা অতিক্রম না করলে তালিকাভুক্তি বাধ্যতামূলক। আবার নিবন্ধনসীমা অতিক্রম করলে নিবন্ধন গ্রহণ বাধ্যতামূলক। এক্ষেত্রে Mandaroty উল্লেখ করতে হবে। স্বেচ্ছা: কোনো ব্যক্তি যদি (ক) করাযোগ্য না হন, (খ) তার অর্থনৈতিক কার্যকৃম যদি করযোগ্য না হয়, বা (৩) তার বার্ষিক টার্নওভার যদি তালিকাভুক্তি বা নিবন্ধনসীমা অতিক্রম না করে, তাহলেও তিনি ইচ্ছা করলে তালিকাভুক্তি বা নিবন্ধন গ্রহণ করতে পারবেন। তখন তাকে Optional নির্বাচন করতে হবে।
কমিশনার
কর্তৃক স্ব-উদ্যোগ: কোনো ব্যক্তি যদি দৃশ্যত (ক) করযোগ্য হন, (খ) তার অর্থনৈতিক
কার্যক্রম করযোগ্য হয়, (গ) তার বার্ষিক টার্নওভার তালিকাভুক্তি বা নিবন্ধনযোগ্য
হয়, এবং (ঘ) তিনি নিজে হতে তালিকাভুক্তি বা নিবন্ধনের আবেদন না করেন, তাহলে
কমিশনার তাকে স্বপ্রণোদিতভাবে তালিকাভুক্তি বা নিবন্ধন প্রদান করবেন। টার্নভার
নির্ধারণের ক্ষেত্রে তালিকাভুক্তযোগ্য ব্যক্তির সহায়তা না পাওয়া গেলে মূসক
কর্তৃপক্ষ তাকে মূসক নিবন্ধিত করবেন।
|
১৩
|
আবেদনের ধরন
|
নতুন নিবন্ধনের ক্ষেত্রে (ক) এ টিক দিতে হবে। পুন:
নেবন্ধনের ক্ষেত্রে (খ) টিক দিয়ে টেবিলে পুরাতন সব বিআইএন লিখতে হবে। যেমন, একটি
কোম্পানির ৫টি শাখা যেমন কোনো একটি সিমেন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নারায়ণগঞ্জে
২টি, চট্টগ্রামে ১টি, খুলনায় ২টি ইউনিট থাকলে ১৯৯১ এর আইনে ৫টি আলাদা নিবন্ধন থাকবে।
২০১২ সালের আইনে ঐ ৫টি শাখা, তাদের সদর দপ্তর, কোনো পণ্যাগার থাকলে সবগুলোর জন্য
একটি নিবন্ধন হবে। এই বক্সে পূর্বের ৫টি বিআইএন লিখতে হবে। ১৯৯১ সালের আইনের
আওতায় ৫টি বিআইএন এর সকল কার্যক্রম নতুন আইনের আওতায় একটি বিআইএন এর অধীনে
পরিচালিত হবে।
|
১৪
|
পরিচালক/অংশীদার/স্বত্তাধিকারীর
তথ্য
|
এখানে
পরিচালক, অংশীদার বা স্বত্তাধিকারীর নাম, পদবি, স্থায়ী ঠিকানা, শেয়ার (%),
এনআইডি ও ইটিআইএন দিতে হবে।
|
১৫
|
ব্যবসায় কার্যক্রমের প্রভৃতি
|
ব্যবসায় কার্যক্রমের প্রকৃতি এখানে নির্বাচন করতে হবে।
ব্যবসায় কার্যক্রমগুলো হলো আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, সরবরাহকারী (উৎপাদক),
সরবরাহকারী (বাণিজ্য) এবং সেবা প্রদানকারী। কোনো ব্যবসায়ী একাধিক কার্যক্রম
পরিচালনা করলে তার সবগুলোই নির্বাচন করবেন। ১৯৯১ সালের আইনের আওতায় যে প্রকৃতি
উল্লেখ করে নিবন্ধন নেয়া হতো তার বাইরে কাজ করতে সমস্যা হতো, যেমন নিবন্ধন সনদে
আমদানিকারক লেখা না থাকলে আমদানি করা যেতো না। ২০১২ সালের আইনের আওতায় নিবন্ধনের
ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়। বিআইএন থাকলেই হবে। এ ধরণের কার্যক্রম সংক্রান্ত তথ্য
সংগ্রহের প্রধান কারণ বিভিন্ন ধরণের প্রতিবেদন তৈরি।
|
১৬
|
অর্থনৈতিক
কার্যক্রমের প্রভৃতি
|
অর্থনৈতিক
কার্যক্রমের প্রকৃতি। এখানে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তিযোগ্য ব্যক্তি কোন ধরণের
ব্যবসায় পরিচালনা করেন তা নির্বাচন করতে হবে। এটিরও প্রধান কারণ রাজস্ব
সংক্রান্ত প্রতিবেদন করা। ১৯৯১ সালের আইনের আওতায় কমোডিটি কোড ও সেবা কোড
ভিত্তিক অর্থনৈতিক কার্যক্রম ছিল। ২০১২ সালের আইনের আওতায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান
ব্যুরো কর্তৃক নির্ধারিত আন্তর্জাতিক পদ্ধতি ব্যবহার করে অর্থনৈতিক কার্যক্রম
ব্যবহার করা হয়েছে যা খাতভিত্তিক রাজস্ব প্রতিবেদন তৈরি করা যাবে এবং তা
আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে হবে।
|
১৭
|
ঘোষণা
|
বর্ণিত তথ্যাদি যে সঠিক ও নির্ভুল সে বিষয়ে একটি ঘোষণা
প্রদান করতে হবে। এ ঘোষণা প্রদান করবেন মালিক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা সোল
পার্টনার।
|