কুমড়োর বিচির যত গুণ
কুমড়োর
বিচির – সামান্য এই কুমড়োর বিচির আছে হাজারো গুণ। ফাইল
ছবিবেলা ১১টা নাগাদ পেটে ছুঁচো নাচে? কিংবা বিকেল বেলায় কুড়মুড়ে মুচমুচে কিছু খেতে ইচ্ছে করে? আর সে ক্ষুধা—হোক না সেটা পেট কিংবা মনের, মেটাতে গেলা হয় গুচ্ছের শিঙাড়া-সমুচা না হয় ওরকমই কিছু একটা।
কাল
থেকে এ অভ্যাস বদলে
ফেলা যাক, এখন থেকে নাশতায় সঙ্গী হোক কুমড়োর বিচি। ভুল
শোনেননি, আসলেই নাশতা হিসেবে কুমড়ার বিচি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে নিতে পারেন। ১০০
গ্রাম কুমড়ার বিচি থেকে ৫৬০ ক্যালরি পাওয়া যায়, তার মানে ক্ষুধা মেটানোর কাজটা ভালোই পারে এ বস্তু।
আর সামান্য এই খাবারে পুষ্টিও গিজগিজ করছে। প্রাকৃতিক
পুষ্টি উপাদানের ‘পাওয়ার হাউস’ মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে আছে ভিটামিন বি, ম্যাগনেশিয়াম, প্রোটিন ও আয়রনের মতো
গুরুত্বপূর্ণ সব খাদ্য উপাদান। ভারতের
ডি কে পাবলিশিং হাউসের একটি বই ‘হিলিং ফুডস’-এ বলা হয়েছে,
কুমড়ার বিচি (বীজ) ভিটামিন বি, ম্যাগনেশিয়াম, লোহা ও প্রোটিনের ভালো
একটি উৎস। বিচিগুলোতে
অপরিহার্য ফ্যাটি অ্যাসিড উচ্চমাত্রায় রয়েছে। এই
ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তে অস্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে। ওজন
কমানো, চুলের বৃদ্ধিসহ কুমড়োর বিচির নানা গুণ জেনে নেওয়া যাক—
হৃদ্যন্ত্র ভালো রাখতে: কুমড়োর বিচিতে আছে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় চর্বি, ফাইবার এবং বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। সবই
হৃদ্যন্ত্রের জন্য উপকারী। এতে
আছে ফ্যাটি অ্যাসিড, যা খারাপ রক্তের কোলেস্টেরল কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায়। ম্যাগনেশিয়ামের
উপস্থিতি ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে
ভূমিকা রাখে।
ভালো
ঘুম: কুমড়োর বিচিতে আছে সেরোটোনিন। স্নায়ু
নিয়ন্ত্রক এই রাসায়নিক বস্তুকে প্রকৃতির ঘুমের বড়ি বলা হয়। ট্রাইপটোফ্যান
নামের অ্যামিনো অ্যাসিড শরীরে গিয়ে সেরোটোনিনে রূপান্তরিত হয়, যা ঘুম নিশ্চিত করে। ঘুমানোর
আগে মুঠভর্তি কুমড়োর বিচি এনে দেবে পুরো রাত্রির শান্তি।
জ্বালাপোড়ার
অনুভূতি কমায়: পেশির জ্বালাপোড়ার অনুভূতি কমানোর ক্ষমতা আছে কুমড়োর বিচির। এ
ছাড়া বাতের ব্যথাও কমায় এটি। অস্থিসন্ধির
ব্যথা কমাতে এর তেলও ভালো কাজে দেয়।
রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: প্রচুর পরিমাণে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ফাইটোকেমিক্যাল শরীরের রোগপ্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়ায়। এ
ছাড়া ভাইরাসের সংক্রমণের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয় এটি।
ভালো
রাখে প্রোস্টেট: কুমড়োর বিচিতে আছে জিংক। যা
পুরুষের উর্বরতা বাড়ায় ও প্রোস্টেটের সমস্যা
প্রতিরোধ করে। এতে
আছে ডিএইচইএ (ডাই-হাইড্রো এপি-অ্যান্ড্রোস্টেনেডিয়ন), যা প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।
ডায়াবেটিসেও
উপকারী: শরীরে নিয়মিত ইনসুলিন সরবরাহ করে এবং ক্ষতিকর অক্সিডেটিভ চাপ কমায়। এ
ছাড়া হজমে সাহায্য করে এমন প্রোটিনও সরবরাহ করে কুমড়োর বিচি, ফলে রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ওজন
কমাতে সাহায্য করে: ওজন কমাতেও সাহায্য করে কুমড়োর বিচি! ছোট্ট এই খাবারেই পেট পূর্ণ থাকে অনেকক্ষণ। আর
আশজাতীয় খাবার বলে হজমেও সময় লাগে। ফলে
ক্ষুধা পায় না, শুধু শুধু বাড়তি খাবার শরীরে ঢোকার সুযোগ পায় না।
কীভাবে খাবেন
কুমড়োর
বিচি
কুমড়োর
বিচি ধুয়ে পরিষ্কার করে রুম টেম্পারেচারে শুকিয়ে ভেজে নিন। ভাজা
কুমড়োর বিচি খেতে পারেন সালাদের সঙ্গে মিশিয়েও।
অলিভ
অয়েল ও মসলা দিয়ে
রান্না করতে পারেন।
বিভিন্ন
ধরনের সবজি রান্নায় মিশিয়ে দিতে পারেন কুমড়োর বিচি।
Tags:
Beauty & Fitness