ছেলেদের ত্বকের যত্ন
মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেদের ত্বকের জন্যও প্রয়োজন নিয়মিত যত্নের। কেননা
অফিস
বা
বাড়ির কেনাকাটা, গুরুত্বপূর্ণ খবরা-খবর পৌঁছানো ইত্যাদি কাজ ছেলেরাই করে থাকে। ফলে রোদে
পুড়ে,
ধুলা-বালির
প্রলেপে ত্বকের রং তামাটে ও রুক্ষ হয়ে যায়। ত্বকের
এই
রুক্ষতা দূর করতে প্রয়োজন নিয়মিত যত্নের। আজকাল
অনেক
ছেলেই ত্বকের যত্নের ব্যাপারে বেশ সচেতন।
রোদ, ধুলাবালি, ঘাম-সব মিলিয়ে তাদের ত্বক রুক্ষ ও মলিন হয়ে পড়লে, দেখা দেয় নানা ধরনের সমস্যা। ব্রণ
তো
দেখা
দেয়ই। তৈলাক্ত
ও
ঘামে
ভেজা
ত্বকে ধুলাবালি মিশে লোমকূপ বন্ধ হয়ে গেলে এমনটি ঘটে। ব্রণ
হলে
প্রতিদিন শেভ না করে এক দিন পর পর করাই ভালো।
শেভ করার পাঁচ-দশ মিনিট আগে কোনো ভালো ময়শ্চারাইজার লাগানো যেতে পারে। শেভের
আগে
রেজারটি অ্যান্টিসেপটিক দিয়ে উষ্ণ গরম পানিতে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখা জরুরি। শেভিংয়ের
সময়
রেজার নিচের দিকে টানতে হবে। অনেকেরই
শেভ
করার
পর
ত্বকে র্যাশ হয়।
সেজন্য হালকা কোনো শেভিং ক্রিম বা ত্বকবান্ধব জেল নয়তো ফোম ব্যবহার করুন। র্যাশ
হওয়ার প্রবণতা যাদের রয়েছে, তাদের আফটার শেভ লোশন এড়িয়ে চলা ভালো। শেভিংয়ের
পরে
কোনো
অ্যান্টি-অ্যালার্জিক বা অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম লাগানো জরুরি।
ব্রণ সমস্যায় করণীয়:
ব্রণ সমস্যার জন্য ভালো কোনো পার্লারে গিয়ে হারবাল ফেসিয়াল করতে পারেন। বাসায়ও
সে
রকম
প্যাক তৈরি করা যায়। ব্রণের
উপরে
দারচিনি পেস্ট করে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ময়লা
জমে
ব্রণ
হয়,
তাই
রুটিনমাফিক ত্বক পরিষ্কার করুন। বারবার
পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে মুছে নিন। ব্রণে
নখ
লাগানো ঠিক নয়। এতে দাগ পড়তে
পারে। বেশি ব্রণ এবং সে কারণে ব্যথা বা অস্বস্তি তীব্র হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। প্রচুর
পরিমাণ পানি, মৌসুমি ফলমূল ও শাকসবজি খেলে ব্রণ হয় না। বাইরে
থেকে
ফিরে
বেশি
করে
পানির ঝাপটা এবং ভালো মানের ফেসওয়াশ দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করুন। চা কম খাবেন। রাত জাগবেন না।
সানবার্নে করণীয়:
গরমে ত্বকে ছোপ ছোপ কালো দাগ ও সানবার্ন হয়ে থাকে। ছেলেদের
হাতে
ও
মুখে
সানবার্ন বেশি দেখা যায়। তাই বাইরে
যাওয়ার অন্তত ১৫ মিনিট আগে সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করুন ত্বকে। আমাদের
দেশের আবহাওয়ায় সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিমের এসপিএফ ৪০-৫০ হওয়া দরকার। প্রতিদিনের
ব্যবহার্য কমপ্যাক্ট পাউডারটিও যেন অতিবেগুনি রশ্মি প্রতিরোধক হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। সানস্ক্রিন
লোশন
বা
ক্রিম লাগানোর ১ ঘণ্টা পর ধুয়ে আবার লাগিয়ে নিন। ১ ঘণ্টা
পর
সানস্ক্রিন লোশনের কার্যকারিতা থাকে না। বিকল্প
হিসেবে টকদই, গোলাপজল ও মুলতানি মাটি দিয়ে প্যাক তৈরি করে প্রতিদিন ত্বকে লাগালে দাগ কমে যাবে। আটা, টমেটো
ও
কাঁচা হলুদের রস দিয়েও প্যাক বানানো যায়। ১৫ মিনিট
পর
গোলাপজল দিয়ে মুছে ফেলুন। নিয়মিত
ফেসিয়াল করুন।
ধরন বুঝে ত্বকের যত্ন:
যাদের ত্বক তৈলাক্ত, তারা ঘুমের আগে ভালো মানের ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে স্ক্রিন টোনার লাগাতে পারেন। লেবু,
শসা
দিয়ে প্যাক বানানো যায়। এতে অয়েলি
ভাব
কমবে,
ফ্রেশও লাগবে। তবে দুধ বা দুধের
সর
এ
ধরনের ত্বকে লাগানো ঠিক নয়। দুধের
বদলে
তিলের পেস্ট লাগাতে পারেন। শুষ্ক
ত্বকে এটি দেয়া যাবে না। এতে ত্বক
আরও
শুষ্ক হয়ে যায়। দুধ বা অলিভ
অয়েল দিয়ে প্যাক বানিয়ে লাগাতে পারেন। ময়শ্চারাইজিং
ক্রিম দিতে পারেন ঘুমের আগে। মিশ্র
ত্বকে মধু, পেঁপে দিয়ে প্যাক বানিয়ে লাগাতে পারেন। এ ছাড়া
ফলের
রস
ত্বক
কোমল
করার
সঙ্গে সঙ্গে রোদে পোড়া ভাব দূর করে। ঘরে বসে যত্নের
পাশাপাশি ত্বকের ধরন বুঝে পার্লার থেকে নেয়া যেতে পারে ডিপ ক্লিনজিং, ভিটামিন সি, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, হার্বাল, স্পেশাল হার্বাল, অ্যালোভেরা, ডায়মন্ড ও ফ্লাওয়ার ফেসিয়াল। ভালো
মানের পার্লারে ফেসিয়াল করুন। তবে ত্বকে
বেশি
ঘষামাজা করবেন না।
এছাড়াও দিনে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করতেই হবে। খাদ্য
তালিকায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিনসমৃদ্ধ তাজা ফল ও সবুজ শাকসবজি রাখুন। সতেজ
ত্বকের জন্য নিয়মিত পরির্চযার বিকল্প নেই।
Tags:
Beauty & Fitness