মটরশুঁটির উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ
শীতের জনপ্রিয় সবজি মটরশুঁটি। খেতে যেমন মজা তেমনি পুষ্টিগুণও অনেক। নিয়মিত মটরশুঁটি খেলে ক্যানসার প্রতিরোধ, ওজন নিয়ন্ত্রণসহ নানাধরনের স্বাস্থ্যসমস্যা দূর হয়।
ছোট ছোট সবুজ দানার মটরশুঁটি, খাবারের স্বাদ বাড়াতে এর তুলনা হয় না। এই সবুজ দানাগুলোকে আমরা সবজি হিসেবেই চিনি। যে কোন সবজি ভাজি, তরকারি, সালাদ, মাছ ভুনা, পোলাও, নুডলস, ইত্যাদি অনেক ধরনের রান্নাতেই হয় এর ব্যবহার। জনপ্রিয় এই মটরশুঁটির পুষ্টিগুণ অনেক। এতে কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন সি, ফলিক অ্যাসিড, বিটাক্যারোটিন, ভিটামিন এ, ফসফরাস, জিঙ্ক, ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স ও ভিটামিন কে আছে। মটরশুঁটি আমিষের ভাল উৎস। আপনি যদি নিরামিষ ভোজী হন তাহলে মাছ বা মাংসের বদলে প্রতিদিন মটরশুঁটি খেতে পারেন।
আসুন, জেনে নেই মটরশুঁটির গুণাগুণ –
ওজন কমায়
মটরশুঁটিতে চর্বি নাই বললেই চলে। ১ কাপ মটরশুঁটিতে প্রোটিন, আঁশ ও পুষ্টি উপাদান থাকলেও শক্তি থাকে ১০০ ক্যালরিরও কম। তাই মটরশুঁটি ওজন নিয়ন্ত্রণে দারুণ কার্যকর।
পাকস্থলীর ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
মটরশুঁটির দানাতে পলিফেনন থাকে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। তাছাড়া মটরশুঁটিতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি, যা সব ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এজন্য প্রতিদিন অন্তত ২ মিলিগ্রাম মটরশুঁটি খাওয়া ভালো।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
মটরশুঁটিতে থাকে জিংক, আয়রন ও ক্যালসিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এছাড়াও এতে আছে উচ্চ পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। তাই নিয়মিত মটরশুঁটি খেলে নানা ধরনের অসুখ-বিসুখ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
বয়স কমায়
মটরশুঁটিতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ফেনোলিক এসিড, পলিফেনন, ক্যারোটিন ও ক্যাটিসিন নামক উপাদান থাকে। তাই প্রতিদিন মটরশুঁটি খেলে সহজে বয়সের ছাপ পড়েনা ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
সন্তান ধারণের আগে
মটরশুঁটিতে প্রচুর পরিমাণে ফলিক এসিড থাকে। ফলিক এসিড হবু মা ও সন্তানের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তাই সন্তান ধারণের আগে থেকেই প্রতিদিন মটরশুঁটি খেতে হবে।
হজমক্ষমতা বাড়ায়
মটরশুঁটিতে থাকে ফাইবার, যা হজমে সাহায্য করে। তাই যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে তাদের জন্য মটরশুঁটি খুবই উপযোগি খাবার।
চোখের জন্য উপকারী
ভিটামিন এ চোখের জন্য খুব উপকারী একটি উপাদান। মটরশুঁটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। নিয়মিত মটরশুঁটি খেলে দৃষ্টিশক্তি বাড়ে।
ত্বকের সুরক্ষায়
মটরশুঁটি ত্বকের জন্য ভালো। এতে থাকে ভিটামিন সি, যা ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়। তাছাড়া কোথাও পুড়ে গেলে দ্রুত সারিয়ে ফেলার জন্য মটরশুঁটির জুড়ি নেই। শরীরের কালো দাগ দূর করতেও মটরশুঁটি কার্যকর।
মটরশুঁটি সেদ্ধ করে পেষ্ট বানিয়ে লাগাতে পারেন ত্বকে। এতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে। এ ছাড়া কোথাও পুড়ে গেলে মটরশুঁটি পেষ্ট পোড়া জায়গায় লাগাতে পারেন। এতে পোড়া দাগ ও ক্ষত দ্রুত সেরে যাবে।
চুল পড়া কমায়
অনেকের অল্প বয়সেই চুল পড়ে যায়। আবার কারও কারও চুল বড় হতেও অনেক সময় লাগে। এসব ক্ষেত্রে মটরশুঁটি খুব উপকারী। মটরশুঁটিতে ভিটামিন বি১২, ফলিক ও ভিটামিন বি৬ থাকে। এই উপাদানগুলো রক্তে লৌহ কণিকা তৈরিতে সাহায্য করে। লৌহ কণিকা শরীরের সমস্ত কোষে অক্সিজেন ও পুষ্টি বহন করে। ফলে চুল প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও অক্সিজেন পায়। তাই নিয়মিত মটরশুঁটি খেলে চুল পড়া অনেকটা কমে যায়।
মটরশুঁটি শীতকালীন সবজি হলেও কোল্ড স্টোরেজ সুবিধার জন্য এখন সারাবছরই পাওয়া যায়। অনেকে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করেও সারাবছর মটরশুঁটি খেয়ে থাকেন। ডিপ ফিজে কাঁচা মটরশুঁটির দানা ছাড়িয়ে সরাসরি রাখতে পারেন। নরমাল ফ্রিজে রাখতে মটরশুঁটি গরম পানিতে হালকা সেদ্ধ করে নেবেন, তা না হলে অঙ্কুরিত হয়ে যাবে
Keywords:
মটরশুঁটি
গাছ, মটরশুঁটি চাষ পদ্ধতি, মটর গাছের ছবি, মটরশুটি গাছ, মটরশুঁটির গল্প, মটর গাছের বিজ্ঞান সম্মত নাম, মটরশুটি চাষ পদ্ধতি, মটর গাছের বৈশিষ্ট্য, মটরশুঁটির উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ
Tags:
Beauty & Fitness