আতা ফলের পুষ্টিগুণ

আতা ফলের পুষ্টিগুণ

আতা ফলের পুষ্টিগুণ


আতা হল অ্যানোনেসি (Annonaceae) পরিবারভুক্ত এক ধরনের যৌগিক ফল এটি শরিফা, শরীফা এবং নোনা নামেও পরিচিত এই ফলের ভিতরে থাকে ছোট ছোট কোষ প্রতিটি কোষের ভেতরে থাকে একটি করে বীজ, বীজকে ঘিরে থাকা নরম রসালো অংশই খেতে হয় পাকা ফলের বীজ কালো এবং কাঁচা ফলের বীজ সাদা বীজ বিষাক্ত এটি গুচ্ছিত ফল অর্থাৎ একটি মাত্র পুষ্পের মুক্ত গর্ভাশয়গুলো হতে একগুচ্ছ ফল উৎপন্ন হয়


এর বেশ কয়েকটি প্রজাতি প্রকরণ আছে সবগুলোকেই ইংরেজিতে 'কাস্টার্ড অ্যাপল', 'সুগার অ্যাপল', 'সুগার পাইন এপল' বা 'সুইটসপ' (Custard-apple, Sugar-apple, sugar-pineapple or sweetsop) বলা হয় সবগুলোকেই বাংলায় 'আতা', 'শরিফা', 'নোনা' -এই তিনটি নামে ডাকা হয় অঞ্চলভেদে নামের কিছু পার্থক্য আছে

আপনি হয়ত জানেন না, আতা দুগ্ধজাত পণ্যের বিকল্প হিসেবে অনেক দেশে এটি পছন্দ করে 


 চলুন জেনে নেয়া যাক আতার স্বাস্থ্য উপকারিতা-

() ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: আপনি যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন, তাহলে রক্তের গ্লুকোজ মাত্রা কমাতে আতা ফল খাওয়া শুরু করুন এছাড়াও, কাস্টার্ড আপেলের ডায়াবেটিস ফাইবারের উপস্থিতিতে চিনির শোষণ কমানো যায়

() হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ: আতা ফলে থাকা ম্যাগনেসিয়াম আপনার কার্ডিয়াক সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে সেইসঙ্গে এতে থাকা ভিটামিন বি- হোমোকিসস্টাইন নিয়ন্ত্রণ করে এবং এই ফলে আছে অ্যামিনো অ্যাসিড যা হৃদরোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে

() ক্ষত শুকায়: গবেষকদের মতে, আতা ফলের বীজগুলো ক্ষত শুকাতে সাহায্য করে এই বীজ ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বকের গভীরে থাকা কোষের পুনঃবৃদ্ধি পায় এবং ক্ষত স্থানের ব্যথা তাৎক্ষণিকভাবে পালায় এই বীজে এন্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রোপার্টি রয়েছে

() বদহজম প্রতিরোধক: তামা ডায়াটেরি ফাইবার সমৃদ্ধ এই ফলটি খুব সহজেই হজম হয় এবং শরীর এর গুণাগুণ তাৎক্ষণিক পেতে থাকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, আতা ফলের গুড়া এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে খেলে আপনার ডায়রিয়ার সমস্যাও মুহূর্তেই গায়েব হবে

() ক্যান্সার প্রতিরোধ: এক গবেষণায় দেখা গেছে, আতা গাছের পাতার নির্যাস স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে স্তনের কোষে থাকা বিষাক্ত টক্সিন দূর করে এছাড়া অ্যান্টি-অক্সিডেন্টপূর্ণ আতা ফল আপনার শরীরের কোষগুলোকে বিভিন্ন ড্যামেজ থেকে রক্ষা করে

() ত্বক এবং চুলের যত্নে: আতা ফল ভিটামিনসমৃদ্ধ যা আপনার ত্বক চুলের জন্য জাদুকরী ভূমিকা পালন করে এটি যখন ত্বক চুলে ব্যবহার করা হয় তখন এটি ময়শ্চারাইজিং এজেন্ট হিসাবে কাজ করে এমনকি এটি আপনার চেহারায় বয়স্কের ছাপ প্রতিরোধ করে আতা ফলেরর ছোট ছোট কোষগুলো আলসারের বিরুদ্ধে কার্যকরী

() দাঁত মাড়ি মজবুত করে: বিশেষজ্ঞরা সপ্তাহে অন্তত একবার দাঁত পরিষ্কার করার জন্য আতা ফলের চামড়া ব্যবহার করে সুপারিশ করেন এটি ব্যবহারের ফলে দাঁত ক্ষয় রোধ হয় এবং মাড়িকে আরো মজবুত করে

() হাঁপানি প্রতিরোধক: হাঁপানি রোগী হিসাবে যদি আপনি মূলার রস খেয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আতা ফলের রস খাবেন এটি ভিটামিন বি- সমৃদ্ধ যা আপনার হাঁপানি (অ্যাস্থমা) প্রতিরোধে সাহায্য করবে

() ওজন বাড়ায়: আপনি কি ওজন বাড়াতে চান? আপনাকে যা করতে হবে তা হল- একটি বাটি নিন, কিছু মধু এবং আতা ফলের ছোট ছোট বীজগুলো মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরী করুন প্রতিদিন এই মিশ্রণটি খান দেখবেন কয়েক মাসের মধ্যে আপনার ওজন বাড়ছে

(১০) গর্ভাবস্থায় সহায়ক: গাইনোকোলজির মতে, গর্ভাবস্থায় আতা ফল খাওয়া গর্ভপাতের ঝুঁকি হ্রাস করে সকালের দূর্বলতা নিয়ন্ত্রণ করে এবং শারীরক ব্যাথার উপশম ঘটায় গর্ভাবস্থার পরে আতা ফল খাওয়ার ফলে স্তনে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়

Post a Comment

Previous Post Next Post