শিশুর ত্বকের সমস্যা এর সমাধান ও যত্ন
অধিকাংশ শিশুই জন্মের পর বিভিন্ন শারিরীক সমস্যায় পরে থাকে। এর মধ্যে ত্বকের সমস্যা অন্যতম। শিশুদের ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা দেখা যায়। যেমন ত্বকে র্যাশ ওঠা, চুলকানি, ত্বকের লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। এমন বিভিন্ন ত্বকের সমস্যা শিশুকে কষ্ট দিতে পারে। সেই সাথে বাবা মা হিসাবে আপনিও পরে যান চিন্তায়। তাই প্রয়োজন শিশুর ত্বকের যত্ন। তবে চিন্তার করার কিছু নেই। এমনকি আপনাকে ডাক্তারের কাছেও যেতে হবে না। কারন সামান্য সচেতনতা ও সঠিক যত্ন আপনার শিশুকে রাখতে পারে সুস্থ। চলুন জেনে নেই শিশুর ত্বকের সমস্যাগুলো এর সমাধান ও যত্ন।
অ্যাটপিক প্রবলেম (অতিরিক্ত শুষ্কতা)
রুক্ষ আবহাওয়ার জন্য শিশুদের ত্বক অনেক সময় অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যায়। এসময়
শিশুর ত্বকের যত্ন নেওয়া খুব জরুরি। এর সঙ্গে
এগজিমার মতো সমস্যাও হতে পারে। বারবার
হাঁচি হতে পারে, একে বলা হয় অ্যালার্জিক রাইনাইটিস। অনেক
ক্ষেত্রে দেখা যায় পরিবারে কারো যদি এগজিমা বা অ্যাজমা থাকে, তাহলে তা বাড়ির শিশুদের মধ্যে বংশগতভাবে চলে আসতে পারে। তবে এসব সমস্যা
সাধারণত শীতকালে বেশি হয়।
কী করনীয়
শিশুকে নিয়মিত খাটি নারকেল তেল বা ভাল মানের অলিভ অয়েল দিয়ে ম্যাসাজ করুন।
এমন হলে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। হোয়াইট
সফট
প্যারাফিন বা ফসপোলিপিড সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার শিশুর ত্বকের পক্ষে উপকারী।
প্রতিদিন শিশুকে ঈষত গরম পানিতে গোসল করান। খেয়াল
রাখবেন পানির তাপমাত্রা যেন ৩৭ ডিগ্রির বেশি না হয়।
অবশ্যই দ্রুত গোসল করানোর চেষ্টা করুন, পাঁচ মিনিটের বেশি গোসল করাবেন না। এতে ত্বকের
কর্নিয়াল লেয়ার ফুলে গিয়ে প্রদাহ হতে পারে।
শিশুর সারা গায়ে যদি প্রচণ্ড চুলকানি হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।
ইনফ্যানটাইল সেবোরিক ডার্মাটাইটিস
যাদের বয়স এক বছরেরও কম তাদের ক্ষেত্রে এই রোগ বেশি হয়। প্রায়
১০-১২% শিশুদের
মধ্যে এই সমস্যা দেখা দেয়। এসময়
শিশুর ত্বকের যত্ন না নিলে নানা সমস্যা দেখা দেয়।
লক্ষণ গুলো কি?
শিশুদের মাথায় খুব খুশকি হয়।
দেহের বিভিন্ন অংশ যেমন গলায়, বগলে, থাইয়ের খাঁজে, ন্যাপি এরিয়ায় লাল লাল দাগ হয়, চামড়া উঠতে শুরু করে। অনেক
সময়
রস
বের
হয়।
চোখের পাতায়, চোখের পালকে স্কেলস হতে পারে।
কী করবেন
নিয়মিত খাটি নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল বাচ্চার চুলে লাগান। ২-৩ মাস মাথায়
তেল
লাগানো প্রয়োজন।
কিটোকোনিজল বা জিংক পাইরেথিওন সমৃদ্ধ শ্যাম্পু দিয়ে সপ্তাহে ২-৩ বার শিশুর চুল পরিষ্কার করুন। দুই থেকে
তিন
মাস
এই
চিকিত্সা করতে হবে।
যেহেতু ত্বকে ইরিটেশন হয় তাই শিশুরা প্রায়ই এই জায়গাগুলো চুলকাতে থাকে। ফলে চামড়া
উঠে
যাওয়াটা স্বাভাবিক। তাই ডাক্তারের
পরামর্শে কোনো মলমজাতীয় ওষুধ লাগান।
শিশুর গায়ে ভালো করে তেল মাখান। নারকেল
তেল,
অলিভ
অয়েল বা আমন্ড অয়েল দিয়ে ভালো করে মাসাজ করে সাবান ব্যবহার করুন।
বাচ্চার জন্য লিকুইড সোপ সবচেয়ে ভালো। সাবানের
পিএইচ মাত্রা শিশুর ত্বকের পিএইচ মাত্রার সমান সেরকম সাবান শিশুর ত্বকের জন্য উপযোগী।
সতর্কতা
শিশুকে কখন সরিষার তেল মাখাবেন না। সরিষার
তেল
থেকে
ফুসকুড়ি বা প্রদাহ হতে পারে। সরিষার
তেল
মাখিয়ে বাচ্চাকে রোদে রাখার যে প্রচলিত রীতি আছে তা একেবারেই অনুচিত। এতে ত্বকের
পিগমেন্টেশন বেড়ে যায় এবং শিশু কালো হয়ে যায়।
শিশুর ব্যবহারের সাবান এবং শ্যাম্পু সম্বন্ধে সচেতন থাকুন। বিজ্ঞাপন
ভালো
লাগলেই শিশুর জিনিস কিনে ফেলবেন না। যেসব
সাবান বা শ্যাম্পু কোয়ালিটি কন্ট্রোলের মাধ্যমে পরীক্ষিত, সেসব পণ্য ব্যবহার করুন।
বাব মার কাছে তার সন্তান চোখের মনি। কোন বাব মা চাই না তার বচ্চা
অসুখে পরুক। কিন্তু
তার
পরও
নানা
অসচেতনতার কারনে শিশুরা বিভিন্ন সমস্যায় পরে থাকে। তাই একটু
সচেতন হোন। আর আপনার
শিশুকে রাখুন সুস্থ্য।
Tags:
Beauty & Fitness