মিষ্টি আলুর উপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ
মিষ্টি
আলু
বাংলাদেশের একটি
অবহেলিত ফসল
হলেও
গণচীন,
পাপুয়া
নিউগিনি এবং
আফ্রিকার কয়েকটি
দেশে
এটি
মানুষের প্রধান
খাদ্য। তাছাড়া
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক
দেশে
এটি
আলুর
চেয়ে
বেশি
দামে
বিক্রয়
হয়। মিষ্টি
আলুর
পুষ্টিগুণ/খাদ্যমান, বাজারদর, সবজি
এবং
গোখাদ্য হিসেবে
এর
গুরুত্ব অনেক
বেশি। এফএও’র হিসাব অনুযায়ী সারা
বিশে-এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল।
মিষ্টি
আলুর
গাছ
একটি
লতানো
বিরুৎ। বৈজ্ঞানিক নাম
Ipomeoa batatas. ইহা
Convolvulaceac পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। ইংরেজিতে একে
Sweet Potato বলে। গ্রীষ্ম প্রধান
জলবায়ুতে এটি
দীর্ঘজীবী, একবার
লাগালে
বছরের
পর
বছর
বেঁচে
থাকে। রবি
মৌসুমে
মিষ্টি
আলু
চাষ
লাভজনক। খরিফ
মৌসুমে
সবজি/শাক/গোখাদ্য হিসেবে
চাষ
করা
লাভজনক।
রোগ প্রতিরোধ করে
মিষ্টি আলুর বিটা ক্যারোটিন অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও এতে ভিটামিন সি,
ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স,
আয়রন এবং ফসফরাসও থাকে। তাই মিষ্টি আলু রোগ প্রতিরোধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
অধিক শক্তিসমৃদ্ধ খাবার
মিষ্টি আলুতে থাকা সুগার রক্তে ধীরগতিতে প্রবেশ করে দেহে শক্তি সঞ্চার করে। এ কারণে ক্রীড়াবিদ ও খেলোয়াড়দেরকে এবং যারা রক্তের নিম্নচাপে আক্রান্ত তাদেরকে মিষ্টি আলু খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
মিষ্টি আলুতে থাকা সুগার বা চিনি খুব ধীরে ধীরে রক্তের সঙ্গে মিশে যায়। এতে শরীরে শক্তির ভারসাম্যও বজায় থাকে। আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে,
মিষ্টি আলু ইনসুলিনের নিঃসরণ ঠিকমত হতে সাহায্য করে যা রক্তের চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তাছাড়া মিষ্টি আলুতে অনেক ফাইবার বা আঁশ আছে,
এর গ্লাইসিমিক ইনডেক্স ৫০,
যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
প্রদাহ কমায়
অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক উভয় ধরণের প্রদাহ কমাতে অত্যন্ত কার্যকরী মিষ্টি আলু। বিটা ক্যারোটিন,
ভিটামিন সি এবং ম্যাগনেসিয়ামের উপস্থিতির কারনে মিষ্টি আলু প্রদাহরোধী ভূমিকা রাখতে পারে।
হজমে সহায়ক
মিষ্টি আলুতে আঁশ বা ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে এবং এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম নামক খনিজ উপাদানটিও থাকে বলে মিষ্টি আলু হজম সহায়ক একটি খাবার। এছাড়াও এতে স্টার্চ থাকে যা পাকস্থলী ও অন্ত্রকে শীতল করতে পারে।
আরথ্রাইটিস প্রতিরোধ করে
বিটা ক্যারোটিন,
জিংক,
ম্যাগনেসিয়াম এবং ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এর উপস্থিতির কারণে মিষ্টি আলু আরথ্রাইটিস মোকাবেলায় কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
মিষ্টি আলুতে থাকা বিটা ক্যারোটিন একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিকারসিনোজেনিক উপাদান। বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার নিরাময়ে বিটা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন সি অত্যন্ত কার্যকরী যা মিষ্টি আলুতে থাকে। পরিপাকনালী থেকে মিষ্টি আলু ক্যান্সার সৃষ্টিকারী বিপজ্জনক উপাদানগুলো শুষে নেয়।
পাকস্থলীর আলসার দূর করে
ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স,
ভিটামিন সি,
বিটা ক্যারোটিন,
পটাসিয়াম এবং ক্যালসিয়াম পাকস্থলীর আলসার নিরাময়ে সাহায্য করে। পাকস্থলী ও অন্ত্রে শীতলিকারক প্রভাব ফেলতে পারে মিষ্টি আলু।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং হৃদপিণ্ড সচল রাখে
ভিটামিন বি ৬ সমৃদ্ধ মিষ্টি আলু হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। মিষ্টি আলুর পটাশিয়াম হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক রাখতে,
কিডনি সুরক্ষায় ও একে কর্মক্ষমতা স্বাভাবিক পর্যায়ে রাখে।
আয়রনের ভাল উৎস
মিষ্টি আলু আয়রনেরও ভালো উৎস। এটি আমাদের শরীরে শ্বেতকণিকা তৈরি,
চাপ প্রতিরোধ,
রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা কার্যকর রাখাসহ নানা কাজে আসে।
তাছাড়া মিষ্টি আলু ইরিটিবেল বাউয়েল সিনড্রোম
(আইবিএস)
এবং আলসারেটিভ কোলাইটিসের মত পেটের রোগেও উপকারী। এছাড়াও মিষ্টি আলু খেলে মানসিক অবসাদ কমে,
ত্বককে উজ্বল ও হাড়কে শক্ত করে এবং শরীরের শক্তি যোগায়।
Tags:
Beauty & Fitness