লেসন-১: নিবন্ধন বা
তালিকাভুক্তি কী?
মূল্য
সংযোজন কর ব্যবস্থায় যে
কোন আমদানিকারক, রপ্তানিকারক বা করযোগ্য সরবরাহ
প্রদানকারীকে মূসক ব্যবস্থার সাথে সম্পৃক্ত হতে হয়। মূসক ব্যবস্থার সাথে এই সম্পৃক্তিকেই নিবন্ধন
বা তালিকাভুক্তি বলে। মূসক প্রশাসনের সাথে কাজ করতে, মূসক সংক্রান্ত দলিলাদি ব্যবহার করতে বা করযোগ্য কোনো
ব্যবসায় পরিচালনা করতে হলে মূসক আইনের আওতায় করতে হয়। আর এ কারনেই
মূসক ব্যবস্থার সাথে নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্তর প্রয়োজন
হয়। আইনী ভাষায়, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক
শুল্ক আইন, ২০১২ এর ধারা ৪
এর আওতায় বা ১০ এর
আওতায় মূসক ব্যবস্থার সাথে সম্পৃক্ততাকে যথাক্রমে মূসক নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি বলে।
লেসন-২: বিআইএন কী?
বিআইএন
বা Business
Identification Number (BIN) হলো
৯ অংকের একটি একক ও অনন্য নম্বর
যা দ্বারা এক জন করদাতাকে
চিহ্নিত করা হয়। মূল্য সংযোজন কর নিবন্ধন ও
টার্নভারকর তালিকাভুক্তির বিপরীতে বিআইএন ইস্যু করা হয়।
বিআইএন
এর বৈশিষ্ট:
- এটি একটি অর্থহীন ক্রম নম্বর
- বিআইএন ৯ ডিজিটের যার প্রথম ৮টি ডিজিট ক্রমিক নম্বর এবং ৯ম ডিজিটটি দ্বৈততা পরিহারের লক্ষে চেক ডিজিট
- একটি প্রতিষ্ঠানের বিআইএন কখনো পরিবর্তন হবে না
- প্রতিষ্ঠানটি টার্নওভার হতে মূসক ব্যবস্থায় নিবন্ধিত বা মূসক হতে টার্নওভারে স্থানান্তরিত হলেও একই নম্বর প্রযোজ্য হবে
- এক কমিশনারেট হতে আরেক কমিশনারেটে স্থানান্তরে ক্ষেত্রেও বিআইএন পরিবর্তন হবে না
লেসন-৩: কেন নিবন্ধিত
বা তালিকাভুক্ত হতে হবে?
- অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য
- করযোগ্য ব্যবসায়ের আইনগত বৈধতা লাভের জন্য
- ব্যবসার স্বীকৃতি লাভের জন্য তথা ব্যবসার ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠার জন্য
- আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য
লেসন-৪: কে নিবন্ধিত
বা তালিকাভুক্ত হবেন?
মূল্য
সংযোজন করের আওতায় একজন "ব্যক্তি" নিবন্ধিত হবেন। ব্যক্তি বলতে নিম্নরূপ অনুষঙ্গকে বুঝানো হয়, যথা:
- একজন স্বাভাবিক ব্যক্তি
- কোনো কোম্পানি
- কোনো ব্যক্তি সংঘ
- কোনো সরকারি সত্তা
- কোনো বৈদেশিক সরকার বা তৎকর্তৃক নির্ধারিত কোনো বিভাগ বা নিযুক্ত কর্মকর্তা
- কোনো আন্তঃদেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংগঠন
- সম্পত্তি উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগ বা অনুরূপ কোনো উদ্যোগ।
লেসন-৫: কখন নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত হতে হবে?
করযোগ্য
ব্যক্তির করযোগ্য অর্থনৈতিক কার্যক্রমের বার্ষিক টার্নওভার নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করলে এবং স্বেচ্ছায় নিবন্ধন গ্রহণ করতে আগ্রহী হলে প্রযোজ্যতা অনুযায়ী নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি গ্রহণ
করতে হবে। সম্পূরক শুল্ক প্রযোজ্য এমন সরবরাহ সংক্রান্ত ব্যবসায় করলে টার্নওভার নির্বিশেষে মূসক নিবন্ধন গ্রহণ করতে হবে।
লেসন-৬: কখন নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই?
নিম্নের
ক্ষেত্রে নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত হওয়া
প্রয়োজন নেই, যথা:
- বার্ষিক টার্নওভার নিবন্ধন সীমার নীচে থাকলে নিবন্ধনের প্রয়োজন নেই কিন্তু স্বেচ্ছায় নিবন্ধন নিতে পারেন
- বার্ষিক টার্নওভার তালিকাভুক্তি সীমার নীচে থাকলে তালিকাভুক্তির প্রয়োজন নেই
- অব্যাহতি প্রাপ্ত পণ্য/সেবা উৎপাদন ও সরবরাহ করলে নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্তির প্রয়োজন নেই।
তবে
কতিপয় কার্যক্রম পরিচালনা যেমন আমদানি বা রপ্তানি করতে
গেলে বিআইএন লাগবে। সেজন্য নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি গ্রহণ
করতে হবে। স্বেচ্ছায় শুধু মূসক নিবন্ধন গ্রহণ করা যায়। স্বেচ্ছায় টার্নওভার কর তালিকাভুক্তি গ্রহণ
করা যায় না।
লেসন-৭: নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তির জন্য প্রযোজ্য দলিলাদি, ফি ও নবায়ন
দলিলাদি: নতুন
আইনের আওতায় নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি গ্রহণ
করতে কোনো ধরণের দলিলাদির প্রয়োজন নেই। ১৯৯১ সালের আইনের আওতায় ট্রেড লাইসেন্স, মেমোরেন্ডাম, আইআরসি, ইআরসি ইত্যাদি দলিলাদির প্রয়োজন হলেও নতুন আইনে সেসকল দলিলাদির প্রয়োজন নেই। শুধু মূসক-২.১ ফরমে
প্রযোজ্য তথ্য প্রদান করতে হবে।
ফি: নতুন আইনের আওতায় মূসক নিবন্ধন বা টার্নওভার কর তালিকাভুক্তির জন্য কোনো ফি প্রদান করতে হবে না।
নবায়ন: একবার প্রদত্ত নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি কখনো নবায়নের প্রয়োজন নেই। বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহতভাবে কার্যকর থাকবে।
লেসন-৮: আবেদন কোন কর্মকর্তার নিকট দাখিল করতে হবে এবং দাখিলের কতো দিনের মধ্যে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি পাওয়া যাবে?
নিবন্ধন
বা তালিকাভুক্তির আবেদন কমিশনার বরাবর দাখিল করতে হবে।
আবেদন দাখিলের পর আবেদনে প্রদত্ত তথ্যাদি প্রাথমিক যাচাটইয়ে সঠিক পাওয়া গেলে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি প্রদান করা হবে। প্রদত্ত তথ্য সঠিক পাওয়া না গেলে কন্টাক্ট সেন্টার হতে আবেদনকারীর সাথে যোগাযোগ করা হবে যাতে তিনি সকল তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করে জমা প্রদান করেন। সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি প্রদান করা হবে না।
বিধিতে ৩ কার্যদিবসের বিধান থাকলেও আবেদন সঠিকভাবে সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করলে অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবেই নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি পাওয়া যেতে পারে। কাগুজে আবেদন করলে তা স্ক্যান করে সেন্ট্রাল প্রসেসিং সেন্টারে প্রেরণ করা হবে। সেখানে ডাটা এন্ট্রি করার পর তা কম্পিউটার সিস্টেমে আপলোড করা হবে এবং তখন নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি তৈরি হবে। ফলে অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে দ্রুত নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি পাওয়া যাবে।
আবেদন দাখিলের পর আবেদনে প্রদত্ত তথ্যাদি প্রাথমিক যাচাটইয়ে সঠিক পাওয়া গেলে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি প্রদান করা হবে। প্রদত্ত তথ্য সঠিক পাওয়া না গেলে কন্টাক্ট সেন্টার হতে আবেদনকারীর সাথে যোগাযোগ করা হবে যাতে তিনি সকল তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করে জমা প্রদান করেন। সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি প্রদান করা হবে না।
বিধিতে ৩ কার্যদিবসের বিধান থাকলেও আবেদন সঠিকভাবে সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করলে অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবেই নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি পাওয়া যেতে পারে। কাগুজে আবেদন করলে তা স্ক্যান করে সেন্ট্রাল প্রসেসিং সেন্টারে প্রেরণ করা হবে। সেখানে ডাটা এন্ট্রি করার পর তা কম্পিউটার সিস্টেমে আপলোড করা হবে এবং তখন নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি তৈরি হবে। ফলে অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে দ্রুত নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি পাওয়া যাবে।
লেসন-৯:
নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি সনদপত্র প্রদর্শন
প্রত্যেক
নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তি
অর্থনৈতিক কার্যক্রমের নির্দিষ্ট স্থানে মূসক নিবন্ধন সনদপত্র বা টার্নওভার কর
সনদপত্র বা উহার সত্যায়িত
অনুলিপি এমনভাবে প্রদর্শন করে রাখবেন যাতে তা সহজে সকলের
দৃষ্টিগোচর হয়।
লেসন-১০:
নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তি সনদপত্র হারিয়ে গেলে তার নকল উত্তোলন
(১)
কোনো কারণে মূসক নিবন্ধন সনদপত্র বা টার্নওভার কর
তালিকাভুক্তিপত্র হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হলে
মূসক নিবন্ধন সনদপত্র বা টার্নওভার কর
তালিকাভুক্তিপত্রের নকল উত্তোলনের কোন প্রয়োজন নেই।
(২) ভ্যাট অনলাইন সিস্টেম হতে তা প্রয়োজন মতো প্রিন্ট করে নিতে পারবেন।