ময়মনসিংহ
শহরে বর্তমান সোনালী ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের পাশে মুক্তাগাছার কিংবদমিত্মতুল্য জমিদার মহারাজ সূর্যকামত্ম আচার্য চৌধুরী শহরে পানীয় জল সরবরাহের নিমিত্ত
রাজ রাজেশবরী ওয়াটার ওয়ার্কস স্থাপন করেন। নির্মাণকাল ১৮৮৯-১৮৯০ খ্রিস্টাব্দ। কথিত
আছে মহারাজের স্ত্রী স্বর্গীয় রাজ রাজেশবরীদেবী একবার কঠিন পীড়ায় আক্রামত্ম হন। পীড়াটি ছিল দুরারোগ্য। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাঁকে পানীয়জল খেতে বারণ করা হয়। অবশেষে এ মহিয়ষী পানীয়
পান না করেই মৃত্যু
মুখে পতিত হন।
মহারাজ
স্ত্রীকে গভীরভাবে ভালবাসতেন। তাই তাঁর স্মৃতিকে অমর করার মানসে তিনি এ জনহিতকর কার্যটি
সম্পাদন করেন। এটিই ময়মনসিংহ শহরে পানীয়জলের প্রথম যান্ত্রিক উপায়ে সরবরাহকেন্দ্র। ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম তীরে এটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণ কাজ সমাধা করতে মোট সময় লাগে প্রায় এক বছর। খরচ
হয় সে সময়কার ১,১২,৫০০/- টাকা
এবং সব মিলিয়ে খরচ
হয়েছিলো ১,৪২,২৭৮/-
টাকা। নির্মাণের পর প্রথম তিন
বছর রাজা বাহাদুরের তত্ত্বাবধানে এটি পরিচালিত হতো। পরে ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে এই ওয়াটার ওয়ার্কসের
দায়িত্ব ন্যসত্ম করা হয় ময়মনসিংহ পৌরসভার
উপর। প্রায় আশি বছর যাবৎ ময়মনসিংহ শহরে পানীয়জলের প্রধান সরবরাহকেন্দ্র ছিল এটি।
ব্রহ্মপুত্র
নদ থেকে পানি তুলে প্রথমে তা বিভিন্ন জলাধারে
কয়েক দিন রেখে শোধন করা হতো। অতঃপর সেই পানি যান্ত্রিক উপায়ে পানির ট্যাংকে তুলে তা বিভিন্ন মহলস্নায়
সরবরাহ করা হতো। দীর্ঘদিন যাবৎ ওয়াটার ওয়ার্কসটি একটি দর্শনীয় বস্ত্ত হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছিলো। প্রতিদিন দূরদূরামত্ম থেকে এখানে প্রচুর দর্শনার্থী ভিড় জমাতেন।
১৯৭১
খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর এই ওয়াটার
ওয়ার্কসটির প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়। শহরে পানি সবরাহের দায়িত্ব ন্যসত্ম হয় জনস্বাস্থ্য বিভাগের
‘‘পঞ্চ জেলা পানি সরবরাহ পরিকল্পনার’’ অধীন।
কিভাবে যাওয়া
যায়:
ময়মনসিংহ
শহরে বর্তমান সোনালী ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের পাশে।