Adinath Temple, Maheshkhali আদিনাথ মন্দির, মহেশখালী


 Adinath Temple, Maheshkhali আদিনাথ মন্দির, মহেশখালী


চর্তুদিকে সাগর বেষ্টিত মহেশখালী দ্বীপের অন্যতম দর্শনীয় স্থান আদিনাথ মন্দির। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ২৮৮ ফুট উঁচু মৈনাক পাহাড় চূঁড়ায় আদিনাথ মন্দিরটি অবস্থিত।   মন্দিরের দৈর্ঘ্য ১০.৮৭ মিটার,  প্রস্থ .৬২ মিটার, উচ্চতা .৯৩ মিটার

তিনভাগে বিভক্ত প্রথম ভাগে .৩৫ মিটার বর্গাকৃতির দুটো পূজা কক্ষ রয়েছে। পূর্বকক্ষে বাণলিঙ্গ শিবমূর্তি আর পশ্চিম কক্ষে অষ্টভূজা দূর্গা মূর্তি। শিবের সাথে মন্দিরে একটি গভীর সম্পর্ক বলে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করে থাকেন। শিবকে রাবন কাঁধে করে কৈলাস পর্বত থেকে লংকার উদ্দেশ্যে যাত্রাকালে শিব মৈনাক পাহাড়ে কিছুদিন অবস্থান করেছিলেন বলে তাদের বিশ্বাস। এছাড়া এলাকার প্রচলিত কিংবদন্তীমতে মহেশখালীর প্রভাবশালী জনৈক নুর মোহাম্মদ সিকদারের স্বপ্নের অলৌকিক নির্দেশমতে জানতে পারেন যে, স্বপ্নে দেখা শিলাখন্ডটি হিন্দুদেরদেববিগ্রহ  দেব বিগ্রহের অনেকগুলো নামের মধ্যেমহেশআদিনাথনাম দুটো অন্যতম। দেববিগ্রহের নামানুসারে দ্বীপের নাম মহেশখালী আর মন্ডপের নামআদিনাথ মন্দিরনামকরণ বলে ধারণা করা হয়। সে যাই হোক মন্দিরকে ঘিরে প্রতি বছর এখানে শিব চর্তুদশী মেলা আয়োজন করা হয়। শিব ভক্তের প্রভাবে মহেশখালীতে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান শারদীয় দূর্গোৎসব সাড়ম্বরভাবে উদ্যাপন করা হয় না। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রচুর পূণ্যার্থী দর্শণার্থী উপলক্ষে মহেশখালীতে সমাগম ঘটে থাকে। ছেলেমেয়ে পাওয়ার জন্য কিংবা প্রাপ্ত ছেলেমেয়ের দীর্ঘায়ূর জন্য মানস করে থাকে বলে অনেক নারী-পুরুষকে মূল মন্দিরের অভ্যন্তরে পশুপাখি বলি দিতে দেখা যায়। সময়ে সনাতন রাখাইন ঘরে ঘরে আগত অতিথিদের সাধ্যমত আপ্যায়নের নিমিত্ত স্থানীয়রা ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আদিনাথ মন্দিরের পাশে বৌদ্ধদের একটি প্রাচীন প্যাগোডা আছে

মহেশখালী চ্যানেল সংলগ্ন পশ্চিম পাশে মৈনাক পাহাড়টি অবস্থিত। ষোড়শ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যে আদিনাথ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয় বলে ধারণা করা হয়। আদিনাথ মন্দির    মন্দির সংলগ্ন  ২১৭ একর  বিশিষ্ট  জমি  এক সময়ে   থাকলে

বর্তমানে প্রতিনিয়ত পাহাড় ভাংগনের কারণে মন্দিরের পূর্ব পাশের বিস্তর জমি সমুদ্রের করাল গ্রাসে বিলীন হয়ে গেছে। মন্দিরের পাশেই কক্সবাজার জেলা পরিষদ কর্তৃক আদিনাথ জেটি সম্প্রতি নির্মিত হওয়ায় পর্যটকদের এখানে আগমন আরো সহজতর হয়েছে। আদিনাথ মন্দিরের পাদদেশে রাখাইন সম্প্রদায়ের একটি পাড়া ঠাকুরতলা বৌদ্ধ বিহার নামে একটি বিহার রয়েছে। স্বাধীনতাযুদ্ধকালে পাক হানাদারবাহিনী বৌদ্ধ বিহারটিতে অগ্নিসংযোগ পূর্বক নির্বিচারে গোলাবর্ষণে জন নিরীহ রাখাইন শহীদ হন। পাকদের নির্মম তান্ডবলীলার স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে এখনো উক্ত বৌদ্ধ বিহারে গলাকাটা কয়েকটি শ্বেত পাথরের বুদ্ধমূর্তি কালের নীরব সাক্ষী হিসেবে বর্তমান রয়েছে। আদিনাথ মন্দিরে আগত পর্যটকদের জন্য অস্থায়ীভাবে রাখাইন রমণীরা তাদের নির্মিত কাপড়, চাদর বিক্রয় করার জন্য পসরা সাজিয়ে রাখে। আদিনাথ মন্দিরের পশ্চিম পাশে অবস্থিত মুদিরছড়ার সন্নিকটে ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে সেপ্টেম্বর মাসে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে কক্সবাজারে আগত বৃটিশ মালিকানাধীনএম.ভি ম্যালাডনামে এক জাহাজ ডুবিতে অনেক লোকের সলিল সমাধি ঘটে। সেদিন আকাশ মেঘলা ছিল, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিও ছিল। হতভাগ্য যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন কক্সবাজার মহকুমায় সদ্য বদলী হয়ে আসা পরিবারবর্গসহ একজন ম্যাজিস্ট্রেট। প্রখ্যাত লেখক সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলীর বড় ভাই সৈয়দ মোস্তফা আলীর মেয়ে ছিলেন হতভাগা ম্যাজিস্ট্রেটের সহধমির্ণী।

কিভাবে যাওয়া যায়:
সড়ক পথে

Post a Comment

Previous Post Next Post