Varendra Research Museum বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রত্নতাত্ত্বিক সংগ্রহশালা বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর রাজশাহী শহরের কেন্দ্রস্থল হাতেম খাঁন মহল্লায় অবস্থিত। বঙ্গীয় শিল্পকলার অপূর্ব সমাহারে সমৃদ্ধ এই সংগ্রহ শালাটি রাজশাহী তথা বাংলাদেশের গর্ব এবং অহংকার। বরেন্দ্র অঞ্চলের রাজন্যবর্গ, সমসাময়িক জ্ঞানী, গুণী ও পন্ডিতজন এখানকার নিজস্ব ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য ১৯১০ সালে প্রতিষ্ঠা করেন বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর। ১৮৬০ সালের ভারতীয় সমিতি  আইন অনুযায়ী ১৯১৪ সালে বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর নিবন্ধন লাভ করে। ভারতবর্ষে প্রাচীনকাল থেকেই শিল্পকলার একাধিক ঘরানা রয়েছে। এগুলোর মধ্যে বিখ্যাত হচ্ছে গান্ধারা, সারনাথ, মথুরা, মগধ এবং বরেন্দ্র ঘরানা। বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর বরেন্দ্র ঘরানাকে প্রতিনিধিত্ব করছে। বরেন্দ্র অঞ্চলের যশস্বী ভাস্কর ধীমান ও তার পুত্র বীতপালের নেতৃত্বধীনে পাল আমলে এই অঞ্চলের বিশেষ ঘরানার প্রতিনিধিত্বশীল ভাস্কর শিল্পের একটি বিদ্যালয় ছিল। বরেন্দ্র অঞ্চলের উদ্ধার করা সিংহভাগ ভাস্কর্য এই বিদ্যালয় থেকে সৃষ্ট। বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরে প্রদর্শিত সুষমামন্ডিত শত শত মূর্তি, রাজ্যপালের ভাতুরিয়া লিপি, প্রথম মহিপালের রাজভিটালিপি, দেওপাড়া প্রশস্তি এবং লক্ষণ সেনের বাগবাড়ী প্রশস্তিতে বরেন্দ্রের নিজস্ব শিল্প ঘরানার যথার্থতা উন্মোচিত হয়েছে। বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরে রয়েছে সমৃদ্ধশালী একটি পুঁথি সংগ্রহশালা। এছাড়াও রয়েছে প্রায় পনেরো হাজার দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থ ও পত্রিকা সমৃদ্ধ একটি গ্রন্থাগার। জাদুঘরে রক্ষিত প্রত্ননির্দশনগুলো নিয়ে সম্যক জ্ঞান লাভের জন্য সংশ্লিষ্ট বই পুস্তক জাদুঘরের গ্রন্থাগারে রয়েছে। জাদুঘরে মুসলিম ঐতিহ্য ও আবহমান বাংলা কক্ষের সংযোজন ঘটেছে। এছাড়াও জাদুঘরে সংরক্ষিত জৈব্য ও অজৈব্য পুরাবস্তু্ পরিচর্যার জন্য একটি আধুনিক সংরক্ষণশালা নির্মিত হয়েছে। প্রতিদিন শত শত বিদ্যার্থী, পর্যটক এবং জ্ঞানান্বেষীগণ এই প্রাচীন জাদুঘরটির বিশাল ও বৈচিত্র্যময় সংগ্রহ দেখে মুগ্ধ হন।

কিভাবে যাওয়া যায়:

রাজশাহী জিরোপয়েন্ট থেকে আনুমানিক ৮০০ মিটার পশ্চিমদিকে প্রধান সরকের উত্তরে অবস্থিত রিক্সাতে,অটোতে যাওয়া যায়।

Post a Comment

Previous Post Next Post