বাংলাদেশের
অংশ ৬,০১৭ বর্গ
কি.মি.আয়তনের সুন্দরবন
বিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপ, দীর্ঘতম
লবণাক্ত জলাভূমি এবং জীব বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ইকোসিস্টেম। এখানে ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদ এবং ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণী বিদ্যমান, যার মধ্যে আছে ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ,
৩১৫ প্রজাতির পাখি, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী
প্রাণী এবং বিশ্ব বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার। প্রধান সরীসৃপ জাতিগুলোর মধ্যে আছে নোনা পানির কুমির, অজগর, গোখরা, গুইসাপ, সামুদ্রিক সাপ, গিরগিটি, কচ্ছপ এবং অন্যান্য। প্রায় ৩০ প্রজাতির সাপ
সুন্দরবনে পাওয়া যায়। জলাভূমি হিসাবে রামসার এলাকার সকল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকায় সুন্দরবনকে ১৯৯২ সালে ৫৬০ তম রামসার এলাকা
হিসাবে যোষণা করা হয়েছে। ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো সুন্দরবনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করে।
সুন্দরবনের ইতিহাস
প্রাচীনকাল
থেকেই সুন্দরবনের অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়। ঐতিহাসিকগণ মনে করেন প্রায় দুই হাজার বছর পূর্বে গাঙ্গেয় বদ্বীপ এলাকায় সুন্দরবনের সৃষ্টি হয়।‘নিকোলাস পাইমেন্টা’ নামীয় একজন মিশনারীর ভ্রমণ কাহিনীতেও সুন্দরবনের অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়।
মুঘল
আমল (১২০৩-১৫৩৮) থেকেই সুন্দরবনকে স্থানীয় রাজাদের নিকট পত্তন/ইজারা দেয়া হত। কালের বিবর্তনে বিশ্বের একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনকে বৈজ্ঞানিক ব্যবস্থাপনার আওতায় আনা হয়। মুঘল সম্রাট আলমগীর-২ এর নিকট
হতে ১৭৫৭ সনে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি উক্ত সুন্দরবনের স্বত্ব লাভ করে এবং ১৭৬৪ সনে সার্ভেয়ার জেনারেল কর্তৃক
জরিপ পূর্বক মানচিত্র তৈরি করে।
বেঙ্গল
বন বিভাগ (Forest Department
in Bengal) স্থাপনের পর বন আইন-১৮৬৫ মোতাবেক ১৮৭৫-১৮৭৬ সনে সুন্দরবনকে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা
করা হয়। ১৮৬৯ সনে সুন্দরবনকে জেলা প্রশাসনের নিকট হতে খুলনা শহরে নবসৃষ্ট বন ব্যবস্থাপনা বিভাগ
এর নিকট ন্যস্ত করা হয় এবং ৬৯-৭৩ সনে সুন্দরবনে
প্রথম জরিপ করা হয়।
সুন্দরবনের
গুরুত্ব সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করার জন্য ১৮৬৩ সাল হতে ১৮৭৪ সাল পর্যন্ত বহু
ব্রিটিশ বন কর্মকর্তা সুন্দরবন
পরিদর্শন করেন এবং সুন্দরবনকে সংরক্ষণ ও গাছ আহরণের
বিষয়ে আইন প্রণয়নের সুপারিশ
করেন।
কিভাবে যাওয়া
যায়:
নদী
পথে : খুলনা লঞ্চঘাট খেকে লঞ্চযোগে সুন্দর বন যাওয়া যাবে।
রাতে ও সকালে লঞ্চ
রয়েছে।
সড়ক
পথে : খুলনা খেকে বাসযোগে কয়রা হয়ে সুন্দরবন যাওয়া যায়।