Ghazi Kalu - The tomb of Champawati গাজী কালু - চম্পাবতীর মাজার




মত দ্বৈততা থাকলেও এটা প্রতিষ্ঠিত সত্য যে, ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বার বাজারের পূর্বপাশে কিঃ মিঃ দূরে গাজী কালু-চম্পাবতীর মাজার অবস্থিত।

গাজী কালু চম্পাবতীর পরিচয় নিয়ে আছে নানা কিংবদমত্মী। জনশ্রম্নতিতে পাওয়া যায় বিরাট নগরের শাসক দরবেশ শাহ্ সিকান্দারের পুত্র গাজী। কালু সিকান্দারের পোষ্য পুত্র। কালু গাজীকে অত্যমত্ম ভালবাসতেন এবং সর্বত্র তাকে অনুসরণ করতেন। গাজীর সাথে ছাপাই নগরের সামমত্ম রাজা রামচন্দ্র ওরফে মুকুট রাজার মেয়ে চম্পাবতীর দেখা হয়। গাজী ভুলে গেলেন তিনি মুসলমান, চম্পাবতীও ভুলে গেলেন তিনি হিন্দু রাজার মেয়ে। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলো। তাদের মিলনের মাঝে দুর্ভেদ্য প্রাচীর হয়ে দাঁড়াল সামাজিক ধর্মীয় বাঁধা। রাজা তাঁর সেনাপতিদের হুকুম দিলেন গাজী কালুকে শায়েসত্মা করতে। ঘোর যুদ্ধে মুকুট রায়ের সেনাপতি ÿÿণা রায় পরাজিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে গাজীর অনুসারী হয়। গাজী-কালূ চম্পাবতীর মাজারের সাথে ÿÿণা রায়ের মাজার আছে। মুকুট রাজা ঝিনাইদহ, কোটচাঁদপুর, বারোবাজারের পূর্ব এলাকা বেনাপোল অঞ্চলের সামসত্ম রাজা ছিলেন। অন্যত্র তিনি রামচন্দ্র, শ্রীরাম বলে পরিচিত। রাজার চারটি বাড়ি ছিল-ঝিনাইদহের বাড়িবাথান, বারোবাজারের ছাপাইনগর (বর্তমানে বাদুরগাছা), কোটচাঁদপুরের জয়দিয়া বাওড়ের বলরামনগর, বেনাপোলের কাগজপুরে।

মুকুট রাজা বা রাজা রামচন্দ্র গাজীর অনুসারী বাহিনীর কাছে পরাজিত হয়ে চম্পাবতীকে নিয়ে তার প্রধান বাড়ি ঝিনাইদহের বাড়িবাথানে চলে আসেন। গাজীও তাকে অনুসরণ করেন। ঝিনাইদহে গিয়ে গাজী, রাজার সেনাপতি গয়েশ রায়ের প্রমোদ ভবন জালিবলস্না পুকুরের পাড়ে বদমতলীতে ছাইনি ফেলেন। এখানেও গাজীর মাজাপার দেখতে পাওয়া যায়। এরপর রাজা চলে যান জয়দিয়া বাওড়ের বাড়িতে। বাড়ির অবস্থান দেখলে মনে হয়, রাজা অত্যমত্ম শৌখিন ছিলেন। জয়দিয়ার বাওড় একসময় ভৈরব নদের অংশ ছিল। বাওড়ের পূর্ব পাড়ে ছিল রাজার বাড়ি। বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার পূর্বে বলহর বাওড় যা এক সময়ে কপোতাÿ নদের অংশ ছিল। দুই বাওড় তথা দুই নদীর মধ্যস্থলে অবস্থিত এই রাচবাড়ির গুরম্নত্ব অপরিশীম। ÿÿ পাশে বাওড়ের কুল ঘেষে তমাল গাছের নিচে আজও গাজীর দরগা বিদ্যমান। হয়তো প্রেমের টানে  গাজী এখানেও ছুটে  এসেছিলেন  সঙ্গী কালুকে নিয়ে। অবশেষে গাজী

অনুসারীদের নিয়ে বহু খন্ড যুদ্ধের পর রাজা রামচন্দ্রের কাছ থেকে চম্পাবতীকে উদ্ধার করে বারোবাজার ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু গাজীর পিতা শাহ্ সিকান্দার বিষয়টা মেনে  নেননি। মুকুটি রাজা শাহ্  সিকান্দারের প্রতিবেশী। হিন্দু সমাজের অসমত্মষ্টির কারণে তিনি গাজীকে বাড়ি উঠতে দেননি। বাধ্য গয়ে গাজী দরবেশ বেশে চম্পাবতীকে নিয়ে বাদাবনে বেরিয়ে পড়লেন। সঙ্গী হলো কালু ÿÿণা রায়। সুন্দরবনের বাদাবন বেশী দূরে ছিল না। নাভরণ , বেনাপোল, সাতÿীরা, বনগাঁ বাদাবন অঞ্চল ছিল। অসীম সাহসী গাজী আসত্মানা গাড়লেন বাদাবনে। গরীব কাঠুরিয়ারা তার ভক্ত হলো।

গাজীর পরিচয় সম্পর্কে আর একটি ঐতিহাসিক তথ্য প্রচলিত আছে আমরা যে ঘটনার অবতারণা করছি তা ঘটেছে পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষ ভাগে। হোসেন শাহের সময়কালে (১৪৯৩-১৫৩৮) মুকুট রাজার শাসন কাল ছিল খাঁনজাহান আলী পরবতীতে সুলতান রোকনউদ্দীনের প্রধার সেনাপতি হিসেবে আসাব বাংলার বিভিন্ন অভিযানে তিনি অংশ নেন। সিলেট ঝিনাইদহের বিভিন্ন অঞ্চলে তাঁর দরগা বা মাজার আছে। গাজী কালু চম্পাবতীর সম্পর্কে নানা ধরণের জনশ্রম্নতি প্রচলিত আছে।

গাজী কালু চম্পাবতীর মাজারে হিন্দু, মুসলিম নির্বিশেষে সব সম্প্রদায়ের মানুষ মানত করে। শ্রীরাম রাজার বেড় দীঘির ÿÿ পাশে ৩টি পাশাপাশি কবরের অবস্থান। মাঝখানে বড় কবরটি গাজীর, পশ্চিমেরটি কালুর এবং পূর্বের ছোট কবরটি চম্পবতীর বলে পরিচিত। মাজার সন্নিহিত ÿÿ-পশ্চিমে একটি প্রাচীন বটগাছ আছে। এই বটগাছের তলদেশে একটি শূণ্যস্থান দেখা যায়। এটিকে অনেকে কূপ কিংবা অন্য কোন কবর বলে মনে করেন। ১৯৯২ সালে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসন কবর তিনটি বাঁধাই করে বেষ্টনি প্রাচীর নির্মাণ খাদেমদের থাকার জন্য সেমিপাকা টিন শেড তৈরী করেছে। গাজী কালু চম্পাবতীর সাথে রায়ের কবরও এখানে রয়েছে।

কিভাবে যাওয়া যায়:

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বার বাজারের পূর্বপাশে কিঃ মিঃ দূরে গাজী কালু-চম্পাবতীর মাজার অবস্থিত।ঝিনাইদহ থেকে বাস অথবা সিএনজি দ্বারা গাজী কালু-চম্পাবতীর মাজার দেখতে যাওয়া যায়

Post a Comment

Previous Post Next Post