Biofloc Technology Fish Farming | বায়োফ্লক প্রযুক্তিতে মাছ চাষ
বায়োফ্লক (Biofloc) প্রযুক্তিতে
মাছ
চাষ
এবং
এর
সুবিধাসমূহ
উচ্চ
বায়োসিকিউরিটি: এই প্রযুক্তিতে যেহেতু উপকারী ব্যাকটেরিয়া (প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া) ব্যবহার করা হয় যা পানির গুণাগুণ বৃদ্ধি ও রোগ সৃষ্টিকারী ক্ষতিকর জীবাণু নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে পুরো সিস্টেমকে উচ্চ বায়োসিকিউরিটি প্রদান করে।
অ্যামোনিয়া
দূরীকরণ: সিস্টেমে বিদ্যমান উপকারী ব্যাকটেরিয়া মাছ চাষের প্রধান নিয়ামক অ্যামোনিয়াকে মাছের দৈহিক বৃদ্ধির জন্য অত্যাবশ্যকীয় উপাদান প্রোটিনে রূপান্তর করার মাধ্যমে সিস্টেমে ক্ষতিকর অ্যামোনিয়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে।
মাছের
বৃদ্ধি নিশ্চিতকরণ: ট্যাংকের পানির গুণাগুণ নিয়ন্ত্রণ, ক্ষতিকর রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু নিয়ন্ত্রণ, মাছের মলও উচ্ছিষ্ট খাদ্যকে মাছের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিনে রূপান্তরের মাধ্যমে মাছের বৃদ্ধি সুনিশ্চিত করে।
উত্তম
প্রোটিনের উৎস: উপকারী ব্যাকটেরিয়া (প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া) এই সিস্টেমে বিদ্যমান ক্ষতিকর অ্যামোনিয়া ও বাইরে থেকে সরবরাহকৃত কার্বনকে ব্যবহার করে অণুজীব আমিষ তৈরি করে। তাছাড়া
ডায়াটম, প্রোটোজোয়া, অ্যালজি, ফেকাল পিলেট, জীবদেহের ধ্বংসাবশেষ ইত্যাদির ব্যাকটেরিয়া ম্যাক্রো-এগ্রিগেট তৈরি করে যা মাছের উত্তম প্রোটিনের উৎস হিসেবে কাজ করে।
খাদ্য
রূপান্তর হার (এফসিআর) হ্রাস করণ: মাছ চাষের ক্ষেত্রে খাদ্য রূপান্তরের হারের মান যত কম হবে মাছ চাষে মুনাফা তত বেশি হবে। এক্ষেত্রে
বায়োফ্লক প্রযুক্তির সিস্টেমের উপকারী ব্যাকটেরিয়া মাছের অব্যবহৃত খাদ্য,মল-মূত্র থেকে নিঃসৃত অ্যামোনিয়াকে ব্যবহার করে অণুজীব প্রোটিন তৈরি করার ফলে বাহির থেকে প্রোটিন সমৃদ্ধ মাছের খাদ্য কম সরবরাহ করলেও হয়, তাই এ সিস্টেমের খাদ্য রূপান্তর হার (এফসিআর) অন্যান্য সিস্টেম থেকে কম হয়।
স্বল্প
খরচ ও অধিক লাভ: আমরা জানি মাছ চাষের শতকরা ৬০ ভাগ খরচই খাবারের জন্য ব্যয় হয়। এই
পদ্ধতিতে সিস্টেমের উপকারী ব্যাকটেরিয়া ট্যাংকেই অণুজীব প্রোটিন তৈরি করে তাই অন্যান্য সিস্টেমের চেয়েও খাদ্য কম লাগে ফলে চাষের খরচ কমে যায় এবং অধিক মুনাফা অর্জন সম্ভব হয়।
সহজ
চাষ পদ্ধতি: এটি একটি সহজ চাষ পদ্ধতি। বাড়িতে
যে কোন চাষি সঠিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কারিগরি দক্ষতা অর্জন পূর্বক ৩০-৪০ টি ট্যাংকে সহজেই মাছ চাষ করতে পারবে।
খুব
কম পানি পরিবর্তন: মাছ চাষের অন্যতম নিয়ামক অ্যামোনিয়া নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে উপকারী ব্যাকটেরিয়া পানির গুণাগুণ রক্ষা করে ফলে ট্যাংকের পানি খুব কম পরিবর্তন করলেই চলে।
জমি
এবং পানির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ: এই সিস্টেমে ছোট ছোট ট্যাংকে অনেক মাছ উৎপাদন হয় এবং ট্যাংকের পানি ও খুব কম পরিবর্তন করতে হয় তাই অল্প জমি ও অল্প পানি ব্যবহার করে অধিক মাছ উৎপাদন সম্ভব হয়। যা
জমি ও পানির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে।
পরিবেশবান্ধব
একোয়াকালচার সিস্টেম: প্রকৃতিতে বিদ্যমান উপকারী ব্যাকটেরিয়া ব্যবহারের মাধ্যমে মাছ চাষ করা হচ্ছে। ফলে
এই পদ্ধতিতে মাছ চাষে ব্যবহৃত বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ ও অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন নেই বললেই চলে। তাই
এটি একটি পরিবেশবান্ধব মাছ চাষ পদ্ধতি।
রোগের
প্রাদুর্ভাব দূরীকরণ: বায়োফ্লক সিস্টেমের উপকারী ব্যাকটেরিয়া মাছের জন্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া সমূহের বৃদ্ধিকে বাধা প্রদান করে ফলে ঐসব ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ থেকে মাছ রক্ষা পাবে। যার
ফলে মাছ চাষের সময় খামারকে রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা করা সম্ভবপর হয়।
বায়োফ্লক
পদ্ধতিতে মাছ চাষে পানির গুণাবলীঃ
১.
তাপমাত্রা – ২৫ – ৩০ ° C
২.
পানির রং – সবুজ, হালকা সবুজ, বাদামী।
৩.
দ্রবীভূত অক্সিজেন – ৭- ৮ mg/L
৪.
পিএইচ – ৭.৫ – ৮.৫
৫.
ক্ষারত্ব – ৫০ – ১২০ mg/L
৬.
খরতা – ৬০ – ১৫০ mg/ L
৭.
ক্যালসিয়াম – ৪ – ১৬০ mg/L
৮.
অ্যামোনিয়া – ০.০১ mg/L
৯.
নাইট্রাইট – ০.১ – ০.২ mg/L
১০.
নাইট্রেট – ০ – ৩ mg/L
১১.
ফসফরাস – ০.১ – ৩ mg/L
১২.
H2S – ০.০১ mg/ L
১৩.
আয়রন – ০.১ – ০.২ mg/L
১৪.
পানির স্বচ্ছতা – ২৫ – ৩৫ সে.মি.
১৫.
পানির গভীরতা – ৩ – ৪ ফুট
১৬.
ফলকের ঘনত্ব – ৩০০ গ্রাম / টন
১৭.TDS
– ১৪০০০ – ১৮০০০ mg/L
১৮.
লবণাক্ততা – ৩ – ৫ ppt