কমলার পুষ্টিগুণ
কমলা এক প্রকারের লেবু জাতীয় রসালো ফল। কমলা গাছের বৈজ্ঞানিক নাম
Citrus reticulata ইংরেজি নাম
Mandarin orange, Mandarin এবং Mandarine। এটি
Rutaceae পরিবার এবং
Citrus গোত্রের ভুক্ত। কমলাকে বলা হয়। কমলা একটি জনপ্রিয় ফল। এটি সরাসরি খাওয়া হয় এবং ফ্রুট সালাদে ব্যবহৃত হয়।
আণবিক গবেষণায় প্রতীয়মান হয়েছে যে,
জাম্বুরা,
মাল্টা ইত্যাদি প্রাকৃতিক-শংকরায়িত সাইট্রাস ফলসমূহ কমলা থেকে উদ্ভূত এবং কমলাই একমাত্র মিষ্টি স্বাদের আদি সাইট্রাস ফল। কমলা লেবুর গাছ আকারে বেশি বড় নয়
- প্রায় ১০ মিটার
(৩০ ফুট)
উচ্চতা পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর ডালপালাগুলি কণ্টকময়,
এবং গাছটির পাতাগুলি চিরহরিৎ ও ৪-১০ সেমি দীর্ঘ। বাংলাদেশের সিলেট বিভাগে কিছু চাষ করা হয়। সুনামগঞ্জের ছাতকে উন্নতমানের কমলা হয়,
তবে উৎপাদনের পরিমাণ বেশি নয়। কাচা অবস্থায় সবুজ এবং পাকলে কমলা রং হয়। কমলা গাছ খরা সহ্য করতে পারে,
তবে এর ফল তা সহ্য করতে পারেনা। কমলা ফল ঠান্ডা আবহাওয়া সহ্য করতে পারেনা। এটি ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলে চাষযোগ্য।
কমলায় বিটা ক্যারোটিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। এর রসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম এবং এর পাতলা ত্বকে আঁশ রয়েছে।
কমলার পুষ্টিগুণ
ওজন কমানো,
ত্বকের পুষ্টি এমন কি হৃদযন্ত্র ভালো রেখে শরীরে রক্ত চলাচল নিয়মিত রাখতে সাহায্য করে কমলা।
দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করতে:
চোখের দৃষ্টি শক্তি ঠিক রাখতে দরকার প্রয়োজনীয় ভিটামিন এ। আমরা সবাই জানি ভিটামিন এ এর অভাবে রাতকানা রোগ হয়। কমলায় বেশ ভালো পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে।
ক্যান্সারের জীবাণু ধ্বংস করে:
কমলায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিনের পাশাপাশি রয়েছে আলফা ও বেটা ক্যারোটিনের মতো ফ্ল্যাভনয়েড অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সহ অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যৌগ যা ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কমলায় উচ্চমাত্রার পুষ্টিগুণ হচ্ছে ফ্ল্যাভনয়েড যা ফুসফুস এবং ক্যাভিটি ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর। তাই ক্যান্সার থেকে রক্ষা পেতে প্রতিদিন ১ টি কমলা খাওয়া উচিত।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে:
কমলা আপনার প্রতিদিনের ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করে। একই সঙ্গে এ ফলটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট জাতীয় উপাদান। এ পুষ্টি উপাদানসমূহ রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ছোটবড় নানা ব্যাধি ও সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়। মুখে ভিটামিন সি এর অভাবে যে ঘাঁ হয় সেটার ঔষুধ হিসেবে কমলা অনেক ভাল কাজ করে। এটি ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রনে সাহায্য করে। কমলাতে উপস্থিত বিটা ক্যারোটিন সেল ড্যামেজ প্রতিরোধে সহায়তা করে। এতে উপস্থিত ক্যালসিয়াম দাঁত ও হাঁড়ের গঠনে সাহায্য করে। এটি হজম শক্তি বাড়ায় ও সর্দিকাশি,
কোষ্ঠকাঠিন্য,
রক্তশূন্যতা সারাতে ভূমিকা রাখে।
ত্বকের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধিতে:
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ত্বকও দ্রুত বুড়িয়ে যেতে শুরু করে। ভিটামিন সি ছাড়াও কমলায় থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমূহ ত্বককে সতেজ ও সজীব রাখতে সাহায্য করে। বার্ধক্যেও ত্বককে অনেকটাই মসৃণ রাখে,
সহজে বলিরেখা পড়ে না। কারণ,
অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও ভিটামিস সি ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখে বহু বছর। ফলে,
বয়স বাড়লেও,
আপনাকে দেখাবে চিরতরুণের ন্যায়।এটি ত্বকের ব্রণ সমস্যা দূর করে ও ত্বকের কালো দাগ সারায়। কমলা রস করে খাওয়ার চেয়ে কোয়া খাওয়াই শরীরের পক্ষে ভাল।
হার্ট সুস্থ রাখে:
কমলায় আছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ উপাদান যা হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি নিয়মিত রাখতে সাহায্য করে।পটাশিয়াম এবং ক্যালশিয়ামের মতো খনিজ উপাদানগুলো শরীরে সোডিয়ামের প্রভাব নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রক্তচাপ ও হৃদস্পন্দন ঠিক রাখতে সাহায্য করে। কমলার চর্বিহীণ আঁশ,
সোডিয়াম মুক্ত এবং কোলেস্টেরল মুক্ত উপাদানগুলো হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে।
Tags:
Beauty & Fitness