চুল পড়া বন্ধ করার উপায়
চুল পড়ে যাওয়া সবার কাছেই খুব খারাপ অভিজ্ঞতা। চুল পড়া বন্ধ
করতে
আমরা
কত
কিছুই না করে থাকি। এমনকি
একের
পর
এক
প্রসাধনীও ফেল করে যায় চুল পড়া বন্ধ করতে। যদিও,
একটি
বিষয়
সব
সময়
মনে
রাখা
উচিত
যে,
যদি
প্রতিদিন কারও ৫০-১০০টির মতন বা তার কিছু বেশি চুল ওঠে, তাহলে তা খুবই সাধারণ ব্যাপার। তবে, মুঠো
মুঠো
চুল
পড়ে
যেতে
শুরু
করলে
তখন
তা
যথেষ্ট চিন্তার কারণ। এই দুশ্চিন্তাকে
দূর
করতে
বাড়িতে কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতেই পারে। তাহলে
দেখে
নেওয়া যাক, বাড়িতে বসেই কীভাবে চুল পড়া বন্ধ করা যায়।
১. নারকেল
নারকেল তেলের কী কী গুণ আছে, তা তো আমরা সবাই জানি। তবে, অনেকেই
আছেন
যারা
চুল
পড়া
শুরু
হলে
চুলে
তেল
দেওয়া বন্ধ করে দেন, যা একেবারেই উচিত নয়। কারণ
নারকেল তেল চুলের সংখ্যায় বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে
নারকেল তেলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট, খনিজ উপাদান এবং প্রোটিন থাকে, যা চুলের আগা ফেটে যাওয়া রোধ করতে পারে।
নারকেল তেলের পাশাপাশি নারকেলের দুধও চুলে ব্যবহার করা যায়।
পদ্ধতি- কিছুটা নারকেল তেল গরম করতে হবে। তারপর
চুলের গোঁড়া থেকে আগা অবধি ভাল করে মালিশ করতে হবে। একঘণ্টা
রেখে
চুলে
শ্যাম্পু করে নিতে হবে।
২. পেঁয়াজের রস
পেঁয়াজের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে সালফার থাকে, যা চুল লম্বা হতে এবং কোলাজেন উৎপন্ন করতে সাহায্য করে। চুলের
গোঁড়ায় পেঁয়াজের রস লাগালে চুল পড়া বন্ধ হয় এবং নতুন চুল গজায়।
পদ্ধতি- একটি পেঁয়াজ টুকরো টুকরো করে কেটে তার ভেতর থেকে রস বের করে নিতে হবে। এবার
সেই
রস
মাথায় ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখতে হবে। তারপর
হালকা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে এবং চুল শুকিয়ে নিতে হবে। সপ্তাহে
দুইবার এই পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
৩. রসুন
পেঁয়াজের মতো রসুনেরও উচ্চমাত্রায় সালফার থাকে। এটি ব্যবহার
করলে
চুল
দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
পদ্ধতি- কয়েকটি রসুন থেঁতো করে নিতে হবে। এবার
তার
মধ্যে নারকেল তেল ঢেলে কয়েক মিনিটের জন্য ফুটিয়ে নিতে হবে। তারপর
ঠাণ্ডা করে মাথায় মালিশ করতে হবে। ৩০ মিনিট
রেখে
তারপর চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে
দুবার এটি করলে চুল ভালো থাকবে।
৪. হেনা
অনেকেই চুলে হেনা ব্যবহার করে থাকেন। হেনা
মূলত
চুলে
রঙ
করতে
সাহায্য করে। এছাড়াও,
হেনার আরও বহু গুণ রয়েছে। যেমন,
হেনা
চুলকে গোঁড়া থেকে শক্ত হতে সাহায্য করে। হেনার
সঙ্গে আরও বেশ কিছু উপাদান মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে চুলে মাখলে চুল ভাল থাকে।
পদ্ধতি- একটি পাত্রে ২৫০ মিলিলিটার সরষের তেল নিতে হবে। এরমধ্যে
৬০
গ্রাম পরিষ্কার করে শুকিয়ে রাখা হেনা পাতা অথবা মেহেন্দি পাতা দিতে হবে। এবার
এটি
ফুটাতে হবে এবং তেলটি ছেঁকে নিতে হবে। তারপর
এই
তেল
প্রতিদিন মাথায় মালিশ করতে হবে। এই তেল খুব যত্ন
করে
হাওয়া রোধক পাত্রে রেখে দিতে হবে।
৫. জবা
জবা ফুল চুলের জন্য দারুণ উপকারি। এটি চুলকে
পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করে, চুল সাদা হয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। এমনকি,
খুশকি দূর করে এবং চুল পড়ে যাওয়া বন্ধ করে।
পদ্ধতি- কয়েকটি জবা ফুলের সঙ্গে তিলের তেল এবং নারকেল তেল মিশিয়ে বেঁটে নিতে হবে। এবার
চুলের গোঁড়ায় ভাল করে লাগাতে হবে। কয়েক
ঘণ্টা চুলে রেখে দিতে হবে। এরপর
ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে হবে।
৬. আমলকী
যাদের খুব চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা আছে, তাদের জন্য আমলকী খুবই উপকারি। কারণ,
আমলকীর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে।
পদ্ধতি- আমলকীর রস বা আমলকী গুঁড়ো লেবুর রসের সঙ্গে মেশাতে হবে। এবার
চুলের গোঁড়ায় লাগাতে হবে এবং শুকিয়ে না যাওয়া অবধি রেখে দিতে হবে। এবার
অল্প
গরম
পানিতে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।
৭. ডিম
ডিমের মধ্যে এমন কিছু উপাদান থাকে, যা আমাদের চুল পড়া বন্ধ করতে পারে। যেমন-
সালফার, ফসফরাস, সেলেনিয়াম, আয়োডাইন, জিঙ্ক এবং প্রোটিন। এই প্রতিটি
উপাদানই চুল বৃদ্ধি করতে দারুণভাবে সাহায্য করে।
পদ্ধতি- একটি ডিমের সাদা অংশ নিতে হবে। এরমধ্যে
এক
চা
চামচ
অলিভ
অয়েল
মেশাতে হবে। এই দুই উপাদান
ভাল
করে
মিশিয়ে একটি পেস্টের মতো বানাতে হবে। এবার
চুলের গোঁড়ায় লাগাতে হবে। ১৫-২০ মিনিট
রেখে
ঠাণ্ডা পানি এবং শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে হবে।
Tags:
Beauty & Fitness