চুলের যত্নে কাঠ বাদাম
স্বাদের
তুলনায় কাঠবাদাম পুষ্টিগুণেই বেশি সমৃদ্ধ। এই
বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন বি, ই, ডি এবং উপকারী ফ্যাট। প্রতি
১০০ গ্রাম কাঠবাদামে রয়েছে – এনার্জি ৫৭৮ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ২০ গ্রাম, আঁশ ১২ গ্রাম, ফ্যাট ৫১ গ্রাম, প্রোটিন ২২ গ্রাম, থায়ামিন ০.২৪ মিলিগ্রাম,
রাইবোফ্লেভিন ০.৮ মিলিগ্রাম,
নিয়াসিন ৪ মিলিগ্রাম, প্যান্টোথেনিক
অ্যাসিড ০.৩ মিলিগ্রাম,
ভিটামিন বি৬ ০.১৩ মিলিগ্রাম,
ভিটামিন ই ২৬.২২
মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৪৮ মিলিগ্রাম, আয়রন ৪ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম
২৭৫ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৪৭৪ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৭২৮ মিলিগ্রাম। এছাড়াও
কাঠবাদামে রয়েছে মনোআনস্যাচুরেটেড ও পলিআনস্যাচুরেটেড অয়েল, জিঙ্ক,
ফলিক অ্যাসিড ও প্রচুর পরিমাণে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এসব
উপাদান আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন।কাঠ
বাদামের উপকারিতা সীমাহীন। এটা
কে ঠিক বাদাম বলা যাবে না, এটা এক ধরনের খাদ্য বীজ। ভালো
মানের কাঠবাদাম পাওয়া যায় উত্তর আফ্রিকা, পশ্চিম এশিয়াতে। কাঠ
বাদাম ভিটামিন এবং মিনারেলে ভরপুর। তাছাড়া
কাঠ বাদামে আছে ডায়েট ফাইবার।
আজ
আমরা চুলের যত্নে কাঠ বাদামের উপকারিতা আলোচনা করবো-
কাঠবাদামের
দুই ধরনের তেল হয়, একটি মিষ্টি আরেকটি তিতা। আর
তিতা কাঠবাদামের তেল চুল পরিচর্যায় কাজে লাগে।
কাঠবাদামের
তেলে থাকা ভিটামিন ই, ডি, পটাশিয়াম ম্যাগনিজিয়াম-এর অন্যতম উৎস যা চুলকে নরম ও উজ্জ্বল করতে
সাহায্য করে। কয়েক
ফোঁটা ব্যবহারেই বেশ কাজ করে।
কাঠবাদামের
তেলের সঙ্গে আরও কিছু উপদান মিলিয়ে ব্যবহার করলে চুল হয় আরও সাস্থ্যোজ্জ্বল।
চুল
পড়া কমাতে ডিমের কুসুমের সঙ্গে ১ টেবিল-চামচ
কাঠবাদামের তেল ও ১ টেবিল-চামচ মধু ভালোভাবে মেশাতে হবে। তারপর
মিশ্রণটি চুলের গোড়া ও পুরো চুলে
লাগিয়ে গরম তোয়ালে দিয়ে পুরো মাথা পেঁচিয়ে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে। সবশেষে
শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। মাথায়
নতুন চুল গজাতে ও চুল পড়া
কমাতে মিশ্রণটি সপ্তাহে একবার ব্যবহার করতে হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত
চুল সারাতে কার্যকর। এক্ষেত্রে
সমপরিমাণ বাদাম তেল ও কুসুম গরম
নারিকেলের দুধ একসঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর
মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে পুরো মাথা তোয়ালে দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
ভঙ্গুর
চুলের ক্ষেত্রে নারিকেলের দুধের পরিবর্তে অর্ধেক পাকা আভোকাডো মেশালে উপকার পাওয়া যাবে।
কয়েক
ফোঁটা কাঠবাদামের তেল হাতের তালুতে নিয়ে চুলে ব্যবহার করুন। দেখবেন
চুল আলোকোজ্জ্বল দেখাচ্ছে। সাধারণত
কোঁকড়া চুলের জন্য এটি বেশি প্রযোজ্য।
কাঠবাদামের
তেলে থাকা উপদান চুল ভালো রাখতে সহায়তা করে। এক্ষেত্রে
মাথার ত্বকে কয়েক ফোঁটা বাদামের তেল নিয়ে ঘষলে চুলে হবে উজ্জ্বল। তাছাড়া
চুল মজবুত ও ঘন করার
পাশাপাশি চুলে পুষ্টি জোগাতে ও মাথার ত্বক
মসৃণ রাখতে এই তেল বেশ কার্যকর।
নিয়মিত
এই তেল মাথায় মালিশ করলে চুল হয় মসৃণ ও নরম।
ফলে চুল সামলানও সহজ হয়। তাছাড়া
কাঠবাদামের তেল মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল ঠিক রেখে নতুন চুল গজাতে ও ভঙ্গুর চুল
দ্রুত ঠিক করতে সাহায্য করে।
যখন
কাঠবাদামের তেল মাখলে মাথার ত্বক, মৃত কোষ ও খুশকি নরম
হয়। ফলে,
ভালো শ্যাম্পু দিয়ে মাথা পরিষ্কার করার সময় খুশকি ও মৃত কোষ
খুব সহজেই উঠে আসে। তাছাড়া
এভাবে মাথার ত্বকে মালিশ করা হলে লোমকূপ খুলে যায় এবং চুলের গভীরে তেল যেয়ে চুলে পুষ্টি যোগাতে সাহায্য করে।
শ্যাম্পু
করার কয়েক ঘণ্টা আগে কাঠবাদামের তেল চুলে মাখুন। এটা
মাথার ময়লা তেলের সঙ্গে উঠে আসবে। ফলে
চুল ধোয়ার সময় তেলে সঙ্গে ময়লাও পরিষ্কার হয়ে যাবে।
মাথার
ত্বকের ভিতর ঢুকে চুলের গভীর থেকে পুষ্টি যোগায় কাঠবাদামের তেল। ফলে
চুল হয় নরম ও স্বাস্থ্যোউজ্জ্বল হয়।
আরও
অনেক উপকারিতা রয়েছে কাঠ বাদাম তেলের।চুলে
ব্যবহারের সাথে সাথে নিয়মিত কাঠ বাদাম খেলে ভিতর থেকে চুল পুষ্টি পাবে এবং চুলের সাথে সাথে ত্বক ও ভালো থাকবে।
Tags:
Beauty & Fitness