গোবিন্দনগর
মন্দির - ঠাকুরগাঁও জেলা
ঠাকুরগাঁও
শহরে টাঙ্গন নদীর পশ্চিম তীরে কলেজপাড়ায় গোবিন্দনগর মন্দির অবস্থিত। গোবিন্দনগরের
একটি শিলালিপি থেকে জানা যায় ১৭০১ সালে রাজা গোবিন্দ রায়ের মাতা টাঙ্গনের তীরে হরির সন্তুষ্টি সাধনে একটি মন্দিরের আচ্ছাদন তৈরি করেন। বর্তমানে
যে মন্দিরটি রয়েছে তার সাথে লাগা পশ্চিমে গড়ে উঠা বস্তিতে এক সময়ে একটি ছোট মন্দিরের ধ্বংসস্তূপ পাওয়া যায়। এটাই
গোবিন্দ মন্দির বলে ধারণা করা হয়। মন্দিরটি
রাজা গোবিন্দ রায় বা তার পূর্ব পুরুষ কর্তৃক মোঘল আমলের মাঝামাঝি সময়ে নির্মিত হয়েছিল। মন্দিরে
গোবিন্দজী নামে শ্রী কৃষ্ণের পূজা করা হতো। মন্দির
ও রাজবাড়ি গড়ের ভেতরে অবস্থিত। গড়টির
চারদিক মাটির প্রাচীর ও গভীর পরিখা
দ্বারা সুরক্ষিত ছিল। গড়ের
পূর্বের সম্পূর্ণ ও দক্ষিণের বেশ
খানিকটা প্রাচীর নদী ভাঙনে নিশ্চিহ্ন হয়েছে। ঠাকুরগাঁও
সরকারি কলেজের উত্তরপাশের প্রাচীর কেটে সমতল করা হয়েছে। পশ্চিমে
জেলা পরিষদ কার্যালয়ের কাছে শহীদ ফাদার লুকাস টেড্র স্কুলটি গড়ের প্রাচীর কেটে তার উপরে স্থাপিত হয়েছে। শুধুমাত্র
জেলা পরিষদের দক্ষিণপাশে সাঁওতাল বস্তির কাছে গড়ের প্রাচীরের সামান্য অংশ এখনো দাঁড়িয়ে আছে।
বর্তমানে
গোবিন্দ মন্দিরটি অষ্টাদশ শতাব্দীতে রাজা রামনাথ নতুন করে তৈরি করেছিলেন। পরে
মন্দিরটি বেশ কয়েকবার সংস্কার করা হয়েছে। মন্দিরে
যে গোবিন্দজী বিগ্রহের পূজা হতো সে সম্পর্কে একটি গল্পের প্রচলন আছে। বলা
হয় শালবাড়ি পরগনার জমিদারের রক্ষক হিসেবে এই মূর্তিটি তার বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত ছিল। রাজা
রামনাথ মূর্তিটি চুরির উদ্দেশ্যে একজন চতুর ব্রাহ্মণ নিয়োগ করেন এবং চুরির সুবিধার্থে পুনর্ভবার সাথে টাঙ্গন নদীকে যুক্ত করে ১২ মাইল দীর্ঘ খাল খনন করেন, যার নাম হয় রামদাড়া। ব্রাহ্মণ
চৌর্যবৃত্তে সফল হলে রাজা রামনাথের সাথে জমিদারের যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে
জমিদার পরাজিত হলে শালবাড়ি পরগনা রাজা রামনাথের দখলে আসে। গোবিন্দজী'র বিগ্রহ ও
রামদাড়া সম্পর্কে মিঃ স্ট্রং রচিত দিনাজপুর জেলার গেজেটিয়ারে পাওয়া যায় - Ramnath conquered
and dispossessed the zaminder of Gobindanagar, near the present village of
Thakurgaon, employing a Brahmin to steal his protecting deity or family idol
Gabinda, and thus causing his downfalll. The conqueror subsequently constructed
a canal connecting Gobindanagar on the Tangan with Prannagar near the
Punarbhaba for the purpose of taking the idol backwards and forwards between
the two places.
ঠাকুরগাঁও-দিনাজপুর সড়কে ঠাকুরগাঁও বিডিআর ক্যাম্প থেকে খোচাবাড়ী-ঊনত্রিশ মাইল পর্যন্ত রাস্তার উত্তরপাশে ক্ষীণকায় যে খালটি আজও দেখা যায়, যার উঁচু ঢিবির উপর বন বিভাগের সেগুন গাছগুলো রয়েছে, সেই খালের নাম রামদাড়া।
কিভাবে যাওয়া
যায়:
ঠাকুরগাঁও
শহর রিক্সা বা ইজিবাইকে যাওয়া যায়।