হরিণমারীর ঐতিহ্যবাহী আমগাছ


প্রথম দেখাতে বটগাছের মত বিশাল আকৃতি দেখে অনেকেই ভুল করে বসেন। বট গাছের মত বিশাল আকৃতি হলেও গাছটি আসলে বট গাছ নয়, এটি একটি আমগাছ। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হরিণমারী সীমান্তে মন্ডুমালা গ্রামে আমগাছটি প্রকৃতির আপন খেয়ালে বেড়ে উঠে আজ ইতিহাস হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শুধু ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের কাছে নয়, এই আমগাছটি এখন বিস্ময় হয়ে দাঁড়িয়েছে গোটা দেশে। গাছের মূল থেকে ডালপালাকে আলাদা করে দেখতে চাইলে রীতিমত ভাবতে হয়। আমগাছটির ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য শুধু দেশের পর্যটক নয়, বিদেশের অনেক অতিথিকেও আকৃষ্ট করে। শত ব্যস্ততার মধ্যে একটু সময় করে ছুটে গিয়ে চোখ জুড়ানোর লোভ সামলাতে পারেন না তারা। ব্যতিক্রমী এই আমগাছ পশ্চাৎপদ বালিয়াডাঙ্গী উপজেলাকে বিশ্বের কাছে আজ পরিচিত করে তুলেছে।

সূর্যপুরী ঠাকুরগাঁও এর মানুষের প্রিয় একটি আমের জাত। সুস্বাদু, সুগন্ধী, রসালো আর ছোট আটি জাতটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য। সেই সূর্যপুরী জাতের লতা বোম্বাই জাতীয় লতানো বিশাল আকৃতির আমগাছটি দাঁড়িয়ে আছে প্রায় দুই বিঘারও বেশী জায়গা জুড়ে। উচ্চতা আনমানিক ৮০-৯০ ফুট। আর পরিধি ৩৫ ফুটের কম নয়। মূল গাছের ০৩ দিকে ১৯টি মোটা মোটা ডালপালা বেড় হয়ে অক্টোপাসের মত মাটি আঁকড়ে ধরেছে। বয়সের ভারে গাছের ডালপালাগুলো নুয়ে পড়লেও গাছটির শীর্ষভাগে সবুজের সমারোহ, সবুজ আমে টইটম্বুর। আমগুলোর ওজন ২০০ গ্রাম থেকে ২৫০ গ্রাম।

স্হানীয়দের কাছে এই আমগাছের ইতিহাস অনেক পুরোনো। মাটি আঁকড়ে থাকা মোটা ডালপালাগুলো দেখে অনেকেই গাছটির বয়স অনুমান করতে চেষ্টা করেন। কেউ বলেন ১৫০ বছর, আবার কেউ বলেন ২৫০ বছর। তবে এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠরাও গাছটির বয়স কত তার সঠিক ভাবে বলতে পারেন না। তাঁরা বলেন কোন সময় আমাগাছটি লাগানো হয়েছে তা জানা নেই। প্রাচীন এই গাছটি সম্পর্কে তারা জেনেছেন তাঁদের বাপ-দাদার কাছ থেকে। তারা আরো জানান, এই আমগাছের চারা থেকে পাশে কয়েকটি গাছ লাগানো হয়েছিল। ১৫ বছর পর সেটাও একই ভাবে ডালপালা মাটির দিকে নুয়ে পড়েছে। ১৫ বছর আগে লাগানো আমগাছটির আকৃতি দেখে সহজেই মূল গাছটির বয়স অনুমান করা যায়, গাছটির বয়স ২০০ বছরের কম নয়।

কিভাবে যাওয়া যায়:
মৈষাল ভাইদের মহিষের গাড়ি একসময়ের একমাত্র পথ চলার বাহন হলেও এখন আর দেখতে পাওয়া যায় না। ঢাকা থেকে সড়ক পথে বিলাসবহুল বাসযোগে সরাসরি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় খুব সহজেই পৌঁছানো যায়। সড়ক পথে ঢাকা থেকে বালিয়াডাঙ্গীর দূরত্ব প্রায় ৪৫০ কি.মি। বিমানপথে সৈয়দপুরে পৌঁছে সড়ক পথে এবং রেলযোগে সৈয়দপুর অথবা দিনাজপুর পৌঁছে সড়কপথে বালিয়াডাঙ্গী নির্বিঘ্নে পৌঁছানো যায়। ঢাকা থেকে সরাসরি এশিয়ান হাইওয়ে বালিয়াডাঙ্গী পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় অধিকাংশ মূল সড়ক পাকা হলেও আনাচে কানাচে কাচা সড়ক পরিলক্ষিত হয়। বেলে মাটি হওয়ায় বর্ষার মৌসুমেও কাচা সড়ক চলাচলের উপযোগী থাকে। বালিয়াডাঙ্গী হয়ে ডাংগী বাজার দিয়ে/ লাহি

Post a Comment

Previous Post Next Post