Shalban Buddhist Monastery শালবন বৌদ্ধ বিহার
শালবন
বৌদ্ধ বিহার বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম। কুমিল্লা জেলার লালমাই-ময়নামতি প্রত্নস্থলের অসংখ্য প্রাচীন স্থাপনাগুলোর একটি এই বৌদ্ধ বিহার।
এতে ৭ম-১২শ শতকের
প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন পাওয়া যায়।
নির্মাণ
ধারণা
করা হয় যে খৃষ্টীয় সপ্তম
শতাব্দীর শেষ থেকে অষ্টম শতাব্দীর প্রথম ভাগে দেববংশের চতুর্থ রাজা শ্রীভবদেব এ বৌদ্ধ বিহারটি
নির্মাণ করেন। শালবন বিহারের ছয়টি নির্মাণ ও পুনঃনির্মাণ পর্বের
কথা জানা যায়। খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর মধ্যে তৃতীয় পর্যায়ে কেন্দ্রীয় মন্দিরটি নির্মাণ করা হয় ও বিহারটির সার্বিক
সংস্কার হয় বলে অনুমান করা হয়। চতুর্থ ও পঞ্চম পর্যায়ের
নির্মাণকাজ ও সংস্কার কাজ
সম্পন্ন হয় নবম-দশম শতাব্দীতে।
বর্ণনা
আকারে
এটি চৌকো। শালবন বিহারের প্রতিটি বাহু ১৬৭.৭ মিটার দীর্ঘ।
বিহারের চার দিকের দেয়াল পাঁচ মিটার পুরু। কক্ষগুলো বিহারের চার দিকের বেষ্টনী দেয়াল পিঠ করে নির্মিত। বিহারে ঢোকা বা বের হওয়ার
মাত্র একটাই পথ ছিল। এ
পথ বা দরজাটি উত্তর
ব্লকের ঠিক মাঝামাঝি স্থানে রয়েছে। প্রতিটি কক্ষের মাঝে ১.৫ মিটার
চওড়া দেয়াল রয়েছে। বিহার অঙ্গনের ঠিক মাঝে ছিল কেন্দ্রীয় মন্দির।
কক্ষ
বিহারে
সর্বমোট ১৫৫টি কক্ষ আছে। কক্ষের সামনে ৮.৫ ফুট
চওড়া টানা বারান্দা ও তার শেষ
প্রান্তে রয়েছে অনুচ্চ দেয়াল। প্রতিটি কক্ষের দেয়ালে তিনটি করে কুলুঙ্গি রয়েছে। কুলুঙ্গিতে দেবদেবী, তেলের প্রদীপ ইত্যাদি রাখা হতো। এই কক্ষগুলোতে বৌদ্ধ
ভিক্ষুরা থাকতেন। সেখানে বিদ্যাশিক্ষা ও ধর্মচর্চা করতেন।
হলঘর
বিহারের
বাইরে প্রবেশ দ্বারের পাশে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে একটি হলঘর রয়েছে। চার দিকে দেয়াল ও সামনে চারটি
বিশাল গোলাকার স্তম্ভের ওপর নির্মিত সে হলঘরটি ভিক্ষুদের
খাবার ঘর ছিল বলে
ধারণা করা হয়। হলঘরের মাপ ১০ মিটার গুণন
২০ মিটার। হলঘরের চার দিকে ইটের চওড়া রাস্তা রয়েছে।
প্রত্নতাত্ত্বিক খনন
প্রত্নতাত্ত্বিক
খননের মাধ্যমে বিহারটির ধ্বংসাবশেষ থেকে আটটি তাম্রলিপি, প্রায় ৪০০টি স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা,
অসংখ্য পোড়া মাটির ফলক বা টেরাকোটা, সিলমোহর,
ব্রৌঞ্জ ও মাটির মূর্তি
পাওয়া গেছে। এগুলো বাংলাদেশের প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যের স্বাক্ষর বহন করছে
কিভাবে যাওয়া
যায়:
কুমিল্লা
শহর হতে ট্যাক্সি যোগে যাওয়া যায়। কুমিল্লা সেনানিবাস বাসট্যান্ড হতে ট্যাক্সি, বাস, রিক্সা যোগে যাওয়া যায়।