Gupta Estate Landlord House and Thakur Dighi গুপ্ত এস্টেট জমিদার বাড়ি এবং ঠাকুর দিঘি
দক্ষিণ
চট্টগ্রামের লোহাগড়া উপজেলার পদুয়া তেওয়ারিহাটের সাথেই দণ্ডায়মান সাড়ে তিন শতাধিক
বছরের পুরনো গুপ্ত এস্টেট তথা জমিদার বাড়ি। জমিদার রামমোহন গুপ্ত পদুয়ায় ১০ একর
জমির ওপর নির্মাণ করেন অপূর্ব স্থাপত্যশৈলীর এই প্রাসাদসম অট্টালিকা। কালের
পরিক্রমায় এ জমিদার বাড়ি তার জৌলুস অনেকটাই হারিয়েছে। কথিত আছে, এ বাড়ির সামনে দিয়ে একসময় কেউ জুতা পায়ে কিংবা
ছাতা মাথায় দিয়ে পর্যন্ত হেঁটে যেতেন না। স্বয়ং বৃটিশরাও এ জমিদার বাড়িকে সম্মান
জানাতো। তবে গুটাতে গুটাতে গুপ্ত এস্টেট এখন অস্থিত্ব সংকটে পড়েছে। ১২০ কক্ষের এ
বাড়িতে এখন বর্তমানে মাত্র ২০ কক্ষ অবশিষ্ট আছে। বিশাল বাড়ির পশ্চিম পাশের ভবনটি
ভেঙ্গে এক তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। দক্ষিণ পাশের দ্বিতল ভবনটি এখনো কোনভাবে
টিকে আছে। পূর্বপাশের ভবনটির উত্তরাংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। দক্ষিণাংশ কোনভাবে টিকে
আছে। মূল ভবনের পূর্ব পাশে আরেকটি দ্বিতল ভবন আছে। বর্তমানে সেটির ধ্বংসাবশেষ টিকে
আছে। বাড়িটি দুইভাগে বিভক্ত। বাড়ির প্রবেশমুখে কারুকার্যসম্বলিত দীর্ঘ গেট। এক
ভাগে বিশাল কাচারি ঘর, যেখানে বসে
রামমোহন তার বিচারকার্য চালাতেন। অপর ভাগের পুরোটাই অন্দরমহল। রাজবাড়ির ভেতরেই
রয়েছে বিশাল মন্দির, পাঠশালাসহ সব
সুযোগসুবিধা। ভবনের দেয়ালগুলি বিশালাকারের। ভবনের সামনে বড় বারান্দা। এ বাড়িতে বিম
হিসেবে কাঠ ব্যবহার করা হয়েছে। সেসব কাঠ আনার জন্য কৃষ্ণ খাল নামে একটি খাল খনন
করা হয়েছিল। চুন–সুরকি এবং ইট দিয়ে তৈরি বিশালাকারের দেয়ালগুলি পিলার হিসেবে
দ্বিতল ভবনকে এখনো মাথা উঁচু করে দাঁড় করিয়ে রেখেছে। তিন পাশে বাড়ি এবং একপাশে
মন্দির। মাঝে খালি মাঠ এবং নাচখানা ছিল। ভবনের দেয়ালগুলি কারুকাজমণ্ডিত। বাড়ির
মাঝখানে যে মাঠ রয়েছে তাতে প্রতিবছর দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্যতম আকর্ষণীয় শারদীয়
দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
জমিদারেরা
ঠাকুরদিঘি নামে বিশাল এক দিঘি খনন করেন। এর আয়তন প্রায় ২২.৪৩ একর। বিশাল এ দিঘির
নামে পুরো এলাকার নামকরণ হয়ে গেছে ঠাকুরদিঘি। দিঘির স্বচ্ছ জল ভ্রমণপিপাসু মানুষের
মন কেড়ে নেয়।
কিভাবে যাওয়া
যায়:
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার
মহাসড়কের কেরানীহাট থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দক্ষিণে সড়ক সংলগ্ন পশ্চিম পাশে।
যাতায়তের মাধ্যম- ব্যক্তিগত গাড়িযোগে, টেক্সি, অটো রিক্সা,
বাসযোগে।