Ethnic Museum, Chittagong জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর, চট্টগ্রাম
জাতিতাত্ত্বিক
জাদুঘর চট্টগ্রাম শহরের একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান। এই জাদুঘরটি মূলত দেশের
বিভিন্ন সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর উত্তরাধিকার ও তাদের জীবনপ্রণালী সম্পর্কে
দর্শনার্থীদের ধারণা দেওয়ার নিমিত্তে প্রতিষ্ঠিত। এশিয়া মহাদেশের দুটি
জাতি-তাত্ত্বিক জাদুঘরের মধ্য চট্টগ্রামের জাতি-তাত্ত্বিক জাদুঘর অন্যতম, অন্যটি রয়েছে জাপানে। এটি গবেষণাকাজেও ব্যবহৃত
হয়ে থাকে।
অবস্থানঃ
এই জাদুঘরটি
চট্টগ্রাম শহরের আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় বাদমতলী সংলগ্ন ১.২৫ একর স্থানে ১৯৬৫
খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই এটি পরিদর্শনের জন্য খুলে দেওয়া
হয়।
ইতিহাসঃ
১৯৬৫ সালে,
বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব
অধিদপ্তরের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠার পর ১৯৭৪ সালে সর্বসাধারণের পরিদর্শনের জন্য
জাদুঘরটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। পরবর্তীকালে ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৫ সালের মধ্যে জাদুঘরে
দুটি কক্ষ অর্ন্তভূক্ত হয়। ১৯৭৪ সালের ৯ জানুয়ারি স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রথম
শিক্ষামন্ত্রী ইউসুফ আলী এই জাদুঘর উদ্বোধন করেন।
বর্ণনাঃ
জাদুঘর কর্তৃপক্ষ
বিভিন্ন সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর প্রাত্যহিক জীবনের ব্যবহৃত কিছু দুর্লভ সামগ্রী
সংগ্রহে রেখেছে যার অধিকাংশই বিলুপ্ত বা বিলুপ্তির পথে। এই জাদঘুরে আছে বাংলাদেশের
প্রায় ২৫টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীসহ বিদেশি ৫টি দেশের জাতিতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর বিভিন্ন
সামগ্রীর তুলনামূলক বিশ্লেষণ। বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মধ্যে পার্বত্য
চট্টগ্রাম অঞ্চলের চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, মুরং, বম, খিয়াং, খুমি, চাক, রাখাইন, পাংখোয়া; সিলেট অঞ্চলের খাসিয়া, মনিপুরী, পাঙন, পাত্র; ময়মনসিংহ
অঞ্চলের গারো, হাজং, দালু, মান্দাই, কোচ; রাজশাহী-দিনাজপুর অঞ্চলের সাঁওতাল, ওরাঁও, রাজবংশী, পলিয়া; এবং যশোর-ঝিনাইদহ অঞ্চলের বুনো বা বোনা,
বাগদি অর্ন্তভুক্ত
রয়েছে। এতে আছে ৪টি গ্যালারী ও ১টি হল। জাদুঘরের ৩টি গ্যালারীতে বাংলাদেশের ২৫টি
সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর নানা রকমের সামগ্রী যেমন: অস্ত্র, ফুলদানী, কাপড়, নৌকা, কাঁচি, অলঙ্কার, বাঁশের পাইপ ইত্যাদি, এবং বাকি গ্যালারীতে ভারত, পাকিস্তান, কিরগিজস্থান, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানির কিছু সম্প্রদায়ের জীবনপ্রণালী
প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা আছে। হলরুমের মানচিত্র ও দেয়ালচিত্রের মাধ্যমে উপজাতিদের
বিভিন্ন রকম উৎসব ও সংস্কৃতি সম্পর্কেও দর্শনার্থীদের ধারণা দেওয়ার ব্যবস্থা
রয়েছে। এছাড়াও এখানে ১৯৮৯ সালে ভেঙে ফেলা জার্মানির বার্লিন প্রাচীরের টুকরো অংশ
প্রদর্শিত হয়েছে। জাদুঘরের সামনে সবুজ বাগান রয়েছে।
পরিদর্শন সংক্রান্ত
তথ্যঃ
চট্টগ্রামের
জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর রবিবার ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন দর্শনার্থীদের
জন্য উন্মুক্ত থাকে। জাদুঘর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী প্রতিদিন দেশি-বিদেশি
গবেষকসহ ২০০-৩০০ জন দর্শনার্থী এই জাদুঘর পরিদর্শন করেন।
কিভাবে যাওয়া
যায়:
উক্ত দশর্নীয়
স্থানে যাওয়ার জন্য বাস বা অটোরিক্সা ব্যবহার করা যেতে পারে।