মেঘালয়
পর্বত শ্রেনীর সবচেয়ে পুর্বের অংশ জৈন্তিয়া হিলসের ঠিক নীচে পাহাড়, প্রাকৃতিক বন, চা বাগান ও
নদীঘেরা একটি গ্রাম লালাখাল, সিলেট জেলার জৈন্তিয়াপুর উপজেলায়। জৈন্তিয়া হিলসের ভারতীয় অংশ থেকে মাইন্ডু ( Myntdu) নদী লালাখালের সীমান্তের কাছেই সারী নদী নামে প্রবেশ করেছে এবং ভাটির দিকে সারীঘাট পেরিয়ে গোয়াইন নদীর সাথে মিশেছে। লালাখাল থেকে সারীঘাট পর্যন্ত নদীর বারো কিমি পানির রঙ পান্না সবুজ-
পুরো শীতকাল এবং অন্যান্য সময় বৃষ্টি না হলে এই
রঙ থাকে। মুলতঃ জৈন্তিয়া পাহাড় থেকে আসা প্রবাহমান পানির সাথে মিশে থাকা খনিজ এবং কাদার পরিবর্তে নদীর বালুময় তলদেশের কারনেই এই নদীর পানির
রঙ এরকম দেখায়।সারীঘাটে নাজিমগডরিসোর্টএরএকটি বোট স্টেশন আছে। এখান থেকে ও বিভিন্ন ধরনের
ইঞ্জিন চালিত নৌকা নিয়ে লালাখাল যাওয়া যায়। লালাখালে সারী নদীর তীরে নাজিমগড়ের একটি মনোরম রেস্টুরেন্ট রয়েছে- ‘রিভার কুইন’ । সব অতিথিদের
জন্যই এটি উন্মুক্ত। রিভারকুইন রেস্টুরেন্টের পাশেই রয়েছে ‘এডভেঞ্চার টেন্ট ক্যাম্প ‘ । এডভেঞ্চার প্রিয়
পর্যটকরা এখানে রাত্রিযাপন করতে পারেন। নদীপেরিয়ে লালাখাল চা বাগানের ভেতর
দিয়ে রয়েছে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠা হাঁটার পথ ( ট্রেকিং ট্রেইল) । এছাড়া পেছনে
পাহাড়ের ঢাল ও চুঁড়োয় গড়ে
উঠেছে নাজিমগড়ের বিলাসবহুল নতুন রিসোর্ট ‘ওয়াইল্ডারনেস’। আবাসিক অতিথি
ছাড়া এখানে প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত। সরাসরি গাড়ী নিয়ে ও লালাখাল যাওয়া
যায়। সারী ব্রীজ় পেরিয়ে একটু সামনেই রাস্তার মাঝখানে একটি পুরনো স্থাপনা।এটি ছিলো জৈন্তিয়া রাজ্যের রাজকুমারী ইরাবতীর নামে একটি পান্থশালা। এর পাশ দিয়ে
হাতের ডানের রাস্তায় ঢুকে সাত কিমি গেলেই লালাখাল। লালাখাল এ রিভার কুইন
রেস্টুরেন্ট এর সামনে থেকে
ও নৌকা নিয়ে জিরোপয়েন্ট ঘুরে আসা যায়।
ভ্রমণের
উপযুক্ত সময়ঃ
বিশেষ করে বর্ষাকালে সিলেট থেকে লালাখাল পর্যন্ত ভ্রমন এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
সড়কের পাশেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে বিশাল খাসিয়া পর্বত, ঘনসবুজে ঢাকা। এই সবুজের মধ্যে
সাদা মেঘের দূরন্ত খেলা আর অনেকগুলো ঝর্ণার
উচ্ছ্বাস।যদি ও শীতকালেই পর্যটক
সমাগম বেশী হয় কিন্তু এই অঞ্চলের পাহাড়ের
সবুজ, মেঘ ও ঝর্ণার প্রকৃত
সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায় বর্ষাকালে। সিলেটে বর্ষা সাধারনতঃ দীর্ঘ হয়। সেই হিসেবে এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ভ্রমনের উপযুক্ত সময়।
কিভাবে যাওয়া
যায়:
সিলেট
জাফলং মহাসড়কে শহর থেকে প্রায় ৪২ কিমি দূরে
সারীঘাট। সারীঘাট থেকে সাধারনতঃ নৌকা নিয়ে পর্যটকরা লালাখাল যান। স্থানীয় ইঞ্জিনচালিত নৌকায় একঘন্টা পনেরো মিনিটের মতো সময় লাগে সারী নদীর উৎসমুখ পর্যন্ত যেতে। নদীর পানির পান্না সবুজ রঙ আর দুইপাশের
পাহাড় সারির ছায়া- পর্যটকদের মুগ্ধ করে। উৎসমুখের কাছাকাছিই রয়েছে লালাখাল চা বাগান।সিলেট শহর
থেকে লালাখাল পর্যন্ত ৬-৮ জন
বহনকারী মাইক্রো ভাড়া হতে পারে ৩৫০০ - ৪০০০ টাকার মধ্যে। ৯-১২ জন
বহনকারী মাইক্রো ভাড়া হতে পারে ৪৫০০ - ৫,৫০০ টাকার
মধ্যে। শুক্রবার হলে আরেকটু বেশী ও হতে পারে।
সারীঘাট থেকে স্থানীয় নৌকা নিয়ে লালাখাল যেতে খরচ পড়বে ১০০০-১৫০০ টাকার মতো খরচ পড়ে। আর নাজিমগড় বোট
স্টেশনের বিশেষায়িত নৌকাগুলোর ভাড়া ২০০০-৫০০০ টাকা পর্যন্ত। গাড়ী নিয়ে লালাখাল চলে গেলে রিভারকুইন রেস্টুরেন্ট থেকে আধাঘন্টার জন্য নৌকা ভাড়া পড়বে ৫০০ টাকা। দুপুরের খাবার প্রতিজন ৪০০-৫০০ টাকা।
You May Read Also:
You May Read Also: