সোনারগাঁ
লোকশিল্প জাদুঘর রাজধানী ঢাকা থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ জেলার
সোনারগাঁ উপজেলায় অবস্থিত। বাংলাদেশের লোকশিল্পের সংরক্ষণ, বিকাশ
ও সর্বসাধারণের মধ্যে লোকশিল্পের গৌরবময় দিক তুলে ধরার জন্য ১৯৭৫ সালে
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের উদ্যোগে বাংলাদেশ সরকার বিশাল এলাকা নিয়ে এই জাদুঘর
প্রতিষ্ঠা করেন। সোনারগাঁয়ের “বড়সর্দারবাড়ি” নামে পরিচিত একটি প্রাচীন জমিদার
প্রাসাদে এই জাদুঘর স্থাপন করা হয়েছে।এখানে আরো রয়েছে একটি সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার,
কারুপল্লী ও একটি বিশাল
লেক।
জাদুঘরে
দর্শনার্থীরা দেখতে পাবেন বাংলার প্রাচীন সুলতানদের ব্যবহৃত অস্ত্র শস্ত্র,
তৈজসপত্র, পোশাক, বর্ম, অলংকার
ইত্যাদি।বাংলার প্রাচীন ও মধ্য যুগের লোকশিল্পের অনেক নিদর্শন রয়েছে এখানে,
রয়েছে বাংলার প্রাচীন
মুদ্রা। কারুপল্লীতে বৈচিত্র্যময় দোচালা, চৌচালা ও উপজাতীয়দের আদলে তৈরি ঘরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের অজানা, অচেনা, আর্থিকভাবে অবহেলিত অথচ দক্ষ কারুশিল্পীর তৈরি বাঁশ- বেত, কাঠ খোদাই, মাটি, জামদানি, নকশিকাঁথা,
একতারা, পাট, শঙ্খ, মৃৎ শিল্প ও
ঝিনুকের সামগ্রী ইত্যাদি কারুপণ্যের
প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্র রয়েছে। এছাড়া প্রতি বৈশাখ মাসে এখানে
সাড়ম্বরে আয়োজিত হয় লোকশিল্প মেলা। এমেলায় লোকসংগীত, যাত্রাপালা, কবিগান ইত্যাদি লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী
অনুষ্ঠানমালা পরিবেশন করা হয়। মেলায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসেন লোকজ
শিল্পী ও কারুশিল্পীরা। মাটি, শোলা, বাঁশ, বেত, কাপড়সহ বিভিন্ন
হস্ত শিল্পজাত সামগ্রী বিক্রি হয় এ মেলায়। এছাড়াও জাদুঘরের সম্মুখে অবস্থিত লেকে
নৌকাভ্রমণ ও শীত মৌসুমে টিকেট কেটে মাছ ধরার ব্যবস্থা আছে।দর্শণার্থীদের
খাওয়া-দাওয়ার জন্য রয়েছে ক্যান্টিন।
কিভাবে যাওয়া
যায়:
ঢাকার গুলিস্তান
থেকে বাসযোগে মোগড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড, অতঃপর সি.এন.জি/রিকশাযোগে জাদুঘর যাওয়া যাবে। মেঘনা নদী পথে- সোনারগাঁ উপজেলায়
বৈদ্যের বাজার লঞ্চঘাট হয়ে রিক্সা/সি.এন.জি যোগে বাংলাদেশ লোক ও কারু শিল্প যাদুঘর,
সোনারগাঁ।