সোনারগাঁ উপজেলার
বারদী বাজারের পশ্চিম-উত্তর কোণে লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রম অবস্থিত । প্রতি বছর
উনিশ জৈষ্ঠ এখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মহাপুরুষ লোকনাথ ব্রহ্মচারীর তিরোধান উৎসবও
সপ্তাহ ব্যাপী মেলা বসে । ১২৯৭ সালের এই দিনে পরমপুরুষ শ্রীশ্রীলোকনাথ ব্রম্মচারী
মৃত্যুবরণ করেন । তার এই মহাকাল প্রয়াণের দিনটিকে ভক্তি শ্রদ্ধার মধ্য দিয়ে
স্মরণ করার জন্যই এই উৎসব ও মেলার আয়োজন
হয় । এই তিরোধান উৎসবে অংশগ্রহণ করতে প্রতিবেশী দেশ ভারত, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলঙ্কাসহ দেশের লক্ষাধিক লোকনাথ ভক্ত বারদী আশ্রমে এসে সমবেত হন ।
জৈষ্ঠের উনিশ তারিখ আশ্রমের চৌচালা ছাদের উপর থেকে ভক্তদের ছুঁড়ে দেয়া বাতাসা
মিষ্টান্ন ও তা কুড়ানোর উচ্ছ্বল আয়োজন হয় যা “হরি লুট” নামে পরিচিত। এছাড়া দিন
ব্যাপী চলে গীতা পাঠ, বাল্যভোগ, লোকনাথের জীবন বৃত্তান্ত পাঠ, রাজভোগ, প্রসাদ বিতরণ ও আরতী কীর্তনসহ ধর্মীয় নানা
অনুষ্ঠান।
শ্রী শ্রী বাবা
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর আশ্রমের দক্ষিণের উঠানে তাঁর সমাধিস্থলের পশ্চিমে শত বৎসর ধরে
কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বিশাল আকৃতির একটি বকুল গাছ । আশ্রমের ভেতরে আছে
লোকনাথ ব্রহ্মচারীর বিশাল তৈলচিত্র । মূল আশ্রমের পেছনে খোলা উঠান পেরিয়ে বিশাল
পাঁচতলা ভবনের যাত্রীনিবাস । পশ্চিমে আরও দুটি বিশালাকার যাত্রীনিবাস । ভক্ত ও
দর্শণার্থীরা বিনা পয়সায় এখানে রাত্রিযাপন করেন। সাধক পুরুষ লোকনাথ ব্রহ্মচারী
জীবিত থাকা অবস্থায় আশ্রমের পাশে কামনা সাগর ও জিয়স নামে পুকুর খনন করা হয়। এই পুকুরটিতে
আশ্রমে আগত ভক্তরা স্নান করেন।
বারদীর লোকনাথ
আশ্রম এখন শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের তীর্থ স্থানই নয়, বরং ধর্ম-বর্ণ-জাতি নির্বিশেষে সকল ধর্মের,
সকল মানুষের কাছে এক মিলন
মেলা হিসেবে পরিচিত।
কিভাবে যাওয়া
যায়:
ঢাকা থেকে
ঢাকা-চট্রগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক পথে বাসে করে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা অতপর সি.এন.জি দিয়ে
বারদী প্রায় ৩৫ কি.মি. যাতায়াত ভাড়া মাত্র ৬৫/- টাকা।