সাহিত্যিক
ও সাংবাদিক কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার সেনহাটি ইউনিয়নের সেনহাটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর স্মৃতি বিজড়িত স্থান এবং ব্যবহার্য জিনিস পত্র নিয়ে তৈরি করা হয়েছে কবি কৃষ্ণচন্দ্র মজুমদার ইনস্টিটিউট জাদুঘর।
কৃষ্ণচন্দ্র
১৮৫৪ সালে বরিশালের কীর্তিপাশা বাংলা বিদ্যালয়ের প্রধান পন্ডিতপদে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে তিনি ঢাকার নর্মাল স্কুলে যোগদান করেন, কিন্তু কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মতবিরোধ হওয়ায় চাকরি ছেড়ে তিনি মডেল স্কুলে (১৮৬০) যোগ দেন। এভাবে তিনি বিভিন্ন স্কুলে দীর্ঘ উনিশ বছর শিক্ষকতা করেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনে তিনি ছিলেন খুবই নিষ্ঠাবান। অনেক কীর্তিমান ব্যক্তি তাঁর ছাত্র ছিলেন।
কৃষ্ণচন্দ্রের
বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘সদ্ভাবশতক’ প্রকাশিত হয় ১৮৬১ সালে।
তাই পরিণত বয়সে তিনি ‘রামের ইতিবৃত্ত’ (১৮৬৮) নামে একটি আত্মচরিত রচনা করেন। মহাভারতের ‘বাসব-নহুষ-সংবাদ’ অবলম্বনে রচিত তাঁর অপর গ্রন্থ হলো ‘মোহভোগ’ (১৮৭১) কৈবল্যতত্ত্ব (১৮৮৩) তাঁর একটি দর্শন বিষয়ক গ্রন্থ। মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হয় তাঁর নাটক
‘রাবণবধ’। এ ছাড়া
তাঁর অপ্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা পনেরো। তাঁর রচনা প্রসাদগুণসম্পন্ন এবং তাঁর কবিতার অনেক পঙ্তি প্রবাদ বাক্যস্বরূপ, যেমন: ‘চিরসুখী জন ভ্রমে কি
কখন ব্যথিত বেদন বুঝিতে পারে’, ‘যে জন দিবসে
মনের হরষে’, ‘কাঁটা হেরি ক্ষান্ত কেন হে’ ইত্যাদি। এ পঙ্তিধারী কবিতাটি
এক সময় স্কুলপাঠ্য বইয়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
কৃষ্ণচন্দ্র
সম্পাদিত পত্রিকাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য মনোরঞ্জিকা, কবিতা কুসুমাবলী ও দ্বৈভাষিকী। শেষ
জীবনে কৃষ্ণচন্দ্র সেনহাটিতে বসবাস করেন এবং বিবিধ রকমের সঙ্গীত রচনা করে অবসর জীবন কাটান। ১৯০৭ সালের ১৩ জানুয়ারি তাঁর
মৃত্যু হয়।
কিভাবে যাওয়া
যায়:
খুলনা
জেলার দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি ইউনিয়ন বাজারের প্রাণকেন্দ্রে কবি কৃষ্ণচন্দ্র ইনস্টিটিউটের অবস্থান। খুলনা জেলা থেকে সড়ক পথ বা নদী
পথে সেনহাটি বাজার আসা যায়। এছাড়া দিঘলিয়া উপজেলা থেকে সড়ক পথে ভ্যান/ইজিবাইক যোগে সেনহাটি বাজারে আসা যায়।