ষাঁড়বুরুজ


ষাঁড়বুরুজ



সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সীমান্তবর্তী উপজেলা গোমস্তাপুরের ষাঁড়বুরুজ প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে পরিচিত। উপজেলার প্রাণকেন্দ্র রহনপুর এর আশেপাশে রয়েছে অগনিত প্রাচীন ঐতিহ্যের নির্দশন। রাজা লক্ষন সেনের আমলে রহনপুর বানিজ্য নগরী হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করে। বানিজ্যক কারনে রহনপুরই তিনি গড়ে তোলেন সূরম্য অট্রালিকা, যা বর্তমানে বিলপ্তির পথে। 

ষাঁড়বুরুজ নামে খ্যাত এই অট্রালিকাটির প্রকৃত নাম শাহবুরুজ। শাহ শব্দের অর্থ বাদশা আর বুরুজ শব্দের অর্থ অট্রালিকা বা বালাখানা। যা পরবর্তীতে লোকমুখে ষাঁড়বুরুজ নামে খ্যাতি লাভ করে। এই অট্রালিকার অদূরে গুমুজ নামে একটি ভবন আছে। লোকমুখে জানা যায় এটি রাজা লক্ষন সেনের বৈঠক খানা ছিল এবং এখানে তিনি তার দরবার চালাতেন। বর্তমানে রাজা লক্ষন সেনের অট্রালিকাটির ভেঙ্গে পড়ে একটি পাহাড়ে রুপ ধারন করে। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় ভগ্ন ভবনের চার পাশে বিভিন্ন বনজ গাছ লাগালেও সংরক্ষনের অভাবে প্রায় নষ্ট হতে বসেছে। অবৈধ দখলদারীর কারণে এর চারপাশে গড়ে ওঠেছে অসংখ্য বসতবাড়ী। দখলদারীরা পাহাড় রুপ অট্রালিকাটি খুরে ইট,খোয়া নিয়ে যাচ্ছে।এ অট্রালিকার ভিতরে মূল্যবান মূর্তি বিভিন্ন সম্পদ আছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

অনেক সময় রাতের অন্ধকারে দূবত্তরা খুড়ার চেষ্টা করেছে এমন আলামত পাওয়া যায়। এলাকাবাসী জানায় রাতে এখানে মাদক সেবীদের আসর বসে। অট্রালিকার অদূরে অধিবাসী আমিরুল জানায় গত ১৯৯৬ আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে বন পরিবেশ প্রত্নতাত্তিক অধিদপ্তরের একটি সরকারী অনুসন্ধান দল এসে পরিদর্শন করে গেলেও পরে আর কোন অগ্রগতি দেখতে যায়নি। সরকারী বেতন ভাতায় একজন লোক গম্বুজ পাহাড়া রক্ষনাবেক্ষনের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও প্রায়ই তাকে সেখানে দেখা যায়না বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। কারো কারো মতে, বাংলা বিজয়ী ইখতিয়ার উদ্দীন মুহাম্মদ বিন বখতিয়ার খলজি পথে বাংলা আগমন করেন। ইতিহাস পরিচিত নদীয়া এই অট্রালিকার পাশেই অবস্থিত। যা পরবর্তীতে নওদা নামে পরিচিতি লাভ করে। লোক মুখে শোনা যায় বখতিয়ার খলজির আগমনের কথা শুনে ভীত হয়ে রাজা লক্ষন সেন নদী পথে পলায়ন করে। বর্তমানে বিলপ্তির পথে এই ঐতিহ্যবাহী নির্দশনটি সরকারী কিংবা বেসরকারী পৃষ্টপোষকতা পেলে একটি পূর্নাঙ্গ বিনোদন পল্লীতে বূপান্তরিত হতে পারে।

কিভাবে যাওয়া যায়:
গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুরে অবস্হিত। রহনপুর বড়বাজার হতে সোজা উত্তরে রহনপুর জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের নিকট রাস্তার ধারে অবস্থিত। গোমস্তাপুর উপজেলা/রহনপুর হতে রিক্সা/ভ্যানযোগে অথবা পদব্রজেও যেতে পারেন।

Post a Comment

Previous Post Next Post